ফেসবুক মার্কেটিং কি?-ফেসবুক মার্কেটিং কিভাবে করব জানুন বিস্তারিত

ফেসবুক মার্কেটিং কিভাবে করব বিষয়টি একটু জটিল হলেও যদি আপনি সময় নিয়ে খুব ভালোভাবে ফেসবুক মার্কেটিং শিখতে পারেন তাহলে নিজে ব্যবসা পরিচালনা করার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং করেও অনেক টাকা ইনকাম করতে পারবেন। বর্তমান সময়ে ফেসবুক প্ল্যাটফর্মটিকে কাজে লাগিয়ে অনেকেই নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দাঁড় করিয়েছে। অনেকে ফেসবুক মার্কেটিং বিষয়টি শিখে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস থেকে ক্লায়েন্টের কাজ করেও টাকা ইনকাম করতে সক্ষম হচ্ছে। যেহেতু ফেসবুকে প্রত্যেকটি পণ্য এবং সার্ভিসের সঠিক অডিয়েন্স জ্ঞাপন করা সম্ভব হয়। নিজের ব্র্যান্ড ভ্যালু ক্রিয়েট করার জন্য ফেসবুক মার্কেটিং শেখা হতে পারে আপনার অন্যতম একটি সিদ্ধান্ত। 
ফেসবুক-মার্কেটিং-কিভাবে-করব
তাই আজকে এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আমরা ফেসবুক মার্কেটিং কিভাবে করব এবং ফেসবুক মার্কেটিং এর আদ্যপ্রান্ত সকল বিষয় সম্পর্কে জানার চেষ্টা করব। পাশাপাশি ফেসবুক মার্কেটিং কি এবং ফেসবুক মার্কেটিং কত প্রকার সবকিছু আপনাদেরকে ডিটেলস আকারে জানানো হবে। সুতরাং হাতে-কলমে ফেসবুক মার্কেটিং এবং ফেসবুক মার্কেটিং কিভাবে করব এ বিষয়গুলো জানার জন্য অবশ্যই আর্টিকেলের প্রত্যেকটি অংশ মনোযোগ সহকারে পড়ার চেষ্টা করুন। হতে পারে আপনি আর্টিকেলের কোন একটি অংশ স্কিপ করে গেলে সে সম্পর্কে বুঝতে সমস্যা হতে পারে।
পোস্ট সূচিপত্র

ফেসবুক মার্কেটিং কি?

ফেসবুক মার্কেটিং হলো এমন একটি মার্কেটিং পদ্ধতি যা ফলোআপ করার মাধ্যমে ফেসবুকের অডিয়েন্সের কাছেই পন্য অথবা সার্ভিস গুলো বিক্রি করা হয়ে থাকে। যদিও পূর্বে আমরা ফেসবুক প্ল্যাটফর্মটি শুধুমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে থাকলেও। বর্তমান যুগে এসে সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে ফেসবুক একটি ইনকামের রাস্তা তৈরি করে দিয়েছে। অনেকে তাদের ব্র্যান্ড এবং পণ্য বিক্রি করে প্রতি মাসে লক্ষ টাকা ইনকাম করছেন। আবার অন্যদিকে সেই পণ্য অথবা সার্ভিস বিক্রি করার ক্ষেত্রে সাহায্য করেও লক্ষ টাকা ইনকাম করছেন। 
ঠিক ধরেছেন আমি ফ্রিল্যান্সার ভাইদের কথাই বলছি যারা ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কাজ করছেন। তারা অবশ্যই ফেসবুক প্ল্যাটফর্মটিকে তাদের অন্য অথবা সার্ভিসের বিক্রয় কেন্দ্র হিসেবে তৈরি করে ফেলেছেন। কেননা আপনি ফেসবুক প্ল্যাটফর্মটিতে সকল ধরনের সার্ভিস এবং পণ্যের অডিয়েন্স খুব সহজেই পেয়ে যাবেন। পূর্বে যেমন কোন একটি পণ্য অথবা সার্ভিসের বিজ্ঞাপন প্রচার করার জন্য পোস্টার অথবা ব্যানারের সাহায্য নেওয়া হতো। কিন্তু বর্তমান সময়ে আপনি ফেসবুকে যদি এড ক্যাম্পেইন পরিচালনা করেন। 

তাহলে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ অটোমেটিক আপনার পণ্য অথবা সার্ভিসের বিষয়বস্তু অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছে দেবে। আর এই পুরো প্রক্রিয়াকে বলা হচ্ছে ফেসবুক মার্কেটিং। ফেসবুক মার্কেটিং বিষয়টি সহজ শুনতে লাগলেও এর অভ্যন্তরে রয়েছে অনেক জটিল বিষয়। আপনি যদি ফেসবুক মার্কেটিং করার সময় সঠিক অডিয়েন্সের কাছে বিজ্ঞাপন শো করতে না পারেন সেক্ষেত্রে শুধু শুধু ডলার নষ্ট হবে কিন্তু আপনার সেখান থেকে কোনরকম সেল আসবে না। আর এজন্যই ফেসবুক মার্কেটিং কিভাবে করব এবং কিভাবে করলে বেশি সেল আনা সম্ভব সে সম্পর্কে জানতে হবে। 

তাহলে ফেসবুক মার্কেটিং কি এ বিষয়টি যদি আমরা সরাসরি বলি তাহলে ফেসবুক প্ল্যাটফর্মটিকে ব্যবহার করে মার্কেটিং স্ট্রাটেজি ফলো করে পণ্য অথবা সার্ভিসের বিজ্ঞাপন প্রচার-প্রচারণা করার প্রক্রিয়াকে ফেসবুক মার্কেটিং বলা হয়।

ফেসবুক মার্কেটিং কত প্রকার

ফেসবুক মার্কেটিং একটি অনেক বড় সেক্টর। তবে মার্কেটিং স্ট্রাটেজি অনুযায়ী অবশ্যই ফেসবুক মার্কেটিং এর প্রকারভেদ রয়েছে। অর্থাৎ ফেসবুক মার্কেটিং পদ্ধতি অনুযায়ী আপনাকে পণ্য এবং সার্ভিস গুলো বিক্রি করার চেষ্টা করতে হবে। ফেসবুক মার্কেটিং যেহেতু একটি প্লাটফর্মকে কাজে লাগিয়ে নির্দিষ্ট পণ্য এবং সার্ভিসের অডিয়েন্সের কাছে ব্যবহার করা হচ্ছে। তাই আপনাকে মার্কেটিং সম্বন্ধে সর্ব প্রথমে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। আপনি যদি মার্কেটিং স্ট্রাটেজি ভালভাবে বুঝতে পারেন তাহলে ফেসবুক মার্কেটিং অনেকটাই সহজ হবে। ফেসবুক মার্কেটিং সাধারণত ২ প্রকার হয়ে থাকে। প্রথমটি হল ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং এবং দ্বিতীয় টি হল পেইড ফেসবুক মার্কেটিং।

ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং

যারা নতুন হিসেবে ফেসবুক মার্কেটিং কিভাবে করব এ বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত তারা প্রাথমিক অবস্থায় ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং করতে পারেন। ফ্রি মার্কেটিং বলতে আপনাকে যেখানে কোনরকম অর্থ ব্যয় না করেই মার্কেটিং কার্যক্রমটি পরিচালনা করার সুবিধা প্রদান করা হয়ে থাকে। ডিজিটাল মার্কেটিং বা অনলাইন মার্কেটিং এ অর্থ ব্যয় ছাড়া মার্কেটিং পদ্ধতি অবলম্বন করতে ফেসবুক হতে পারে একটি অন্যতম প্লাটফর্ম। তবে আপনি যদি এই প্লাটফর্মে ফ্রিতে ব্যবসা অথবা অন্যের ব্যবসা পরিচালনা করতে চান তাহলে অবশ্যই কিছু ট্রিক্স বা পন্থা অবলম্বন করতে হবে। 

নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ের উপর ভিত্তি করে ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং পরিচালনা করা হয়ে থাকে। টাকা পয়সা ইনভেস্ট করতে হচ্ছে না তাই বিষয়টিকে ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং বলে অভিহিত করা হয়। ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং আবার দুই ভাবে করা যায়। প্রথমটি হল ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে পণ্য অথবা সার্ভিসের বিজ্ঞাপন প্রদান করে। দ্বিতীয়টি হল নিজস্ব ফেসবুক পেজ থাকবে যেখানে অর্গানিক ভাবে অডিয়েন্স এর কাছে অন্য অথবা সার্ভিসের বিজ্ঞাপনটি পৌঁছাবে। এজন্য প্রথমে একটি ফেসবুক পেজ খুলতে হবে। 

ফেসবুক পেজের নাম, কভার পিকচার এবং প্রোফাইল পিকচার অবশ্যই খুব ভালো মানের দিতে হবে যেন ফেসবুক পেজটিকে দেখে প্রফেশনাল মানের মনে হয়। এরপর আপনি যে পণ্য বিক্রি করতে চাচ্ছেন তার পরিপূর্ণ তথ্য ক্যাপশনে লিখে প্রোডাক্ট অথবা সার্ভিসের ফটো এবং ভিডিও আকারে পোস্ট করতে পারেন। প্রাথমিক অবস্থায় হয়তো খুব বেশি লাইক অথবা কমেন্ট করবে না। পরবর্তীতে একটি সময় আপনি অর্গানিকভাবে দর্শক জেনারেট করতে পারবেন এবং সেখান থেকে সেলও আনতে পারবেন। 

যদিও অন্য অথবা সার্ভিসের বিজ্ঞাপন গুলো ইমেজ আকারে দেওয়ার চাইতে ভিডিও আকারে দিলে সবচেয়ে বেশি রিচ পাওয়া যায়। ফেসবুক পেজ বাদে আপনার পণ্য এবং সার্ভিসের উপর ডিপেন্ড করে ফেসবুকে নির্দিষ্ট গ্রুপে প্রোডাক্টের ছবি অথবা ভিডিও পোস্ট করেও সেল আনতে পারবেন। কিন্তু গ্রুপের এডমিন থেকে অ্যাপ্রুভ পাওয়ার পরিবর্তে আপনি আপনার পণ্য এবং সার্ভিসের পোস্ট পাবলিশ করতে সক্ষম হবেন। আশা করি নতুনদের জন্য ফেসবুক মার্কেটিং কিভাবে করব এই প্রশ্নটিতে ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং এর তথ্যগুলো অনেকটাই কাজে দেবে।

পেইড ফেসবুক মার্কেটিং

আমরা ইতিমধ্যে ফেসবুক মার্কেটিং কি এবং এটি ফ্রিতে কিভাবে পরিচালিত করা যায় সে সম্পর্কে অবগত হতে পেরেছি। পূর্বে ফ্রি মার্কেটিং করে অনেকেই অর্থ ইনকাম করলেও বর্তমানে ফ্রি মেথডের চাইতে পেইড ফেসবুক মার্কেটিং সবচেয়ে বেশি কার্যকর। ফ্রিতে সেল আনার জন্য অবশ্যই আপনার নির্দিষ্ট একটি সময় অপেক্ষা করতে হবে। অর্থাৎ আপনার পেইজে যদি ফলোয়ার গেইন হয় এরপর আপনি সেখান থেকে প্রোডাক্ট সেল নিশ্চিত করতে পারবেন। যেহেতু এটি একটি লং টার্ম প্রসেস সেক্ষেত্রে পেইড ফেসবুক মার্কেটিং সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পালন করতে সক্ষম হবে। 

আপনি যদি চান আজকেই একটি ফেসবুক পেজ খুলে সেটি যদি পেইড বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে অডিয়েন্স এর কাছে পৌঁছাতে পারেন তাহলে দ্রুত সেল নিশ্চিত করা সম্ভব। তাহলে আরও একটি বিষয় সামনে আসলো সেটি হল পেইড ফেসবুক মার্কেটিং করার ক্ষেত্রেও আপনার একটি ফেসবুক পেজের প্রয়োজন হবে। আর যদি আপনি নিজে ব্যবসা কার্যক্রমটি পরিচালনা করতে না চান শুধুমাত্র ফ্রিল্যান্সিং করে ফেসবুক মার্কেটিং থেকে ইনকাম করতে চাচ্ছেন তাহলে নিজস্ব কোন কিছুই থাকতে হবে না। শুধুমাত্র আপনি ফেসবুক মার্কেটিং কি এবং এর স্কিল সম্পর্কে যদি অবগত হতে পারেন। 

তাহলেই মার্কেটপ্লেস এবং আউট অফ মার্কেটপ্লেস থেকে লক্ষ টাকা ইনকাম করা সম্ভব। পেইড ফেসবুক মার্কেটিং করার জন্য আপনাকে ফেসবুক এড ক্যাম্পেইন রান করা শিখতে হবে। এডবেলা যার কিভাবে ক্রিয়েট করতে হয়, টার্গেটেড অডিয়েন্স, লোকেশন সেট আপ, বয়স সকল কিছুই ক্যাম্পেইন এর মাধ্যমে পরিচালনা করা শিখতে হবে। ধরুন আপনি একটি ফেসবুক পেজের বিজ্ঞাপন পরিচালনা করতে চাচ্ছেন যার প্রোডাক্ট হলো বাচ্চাদের খেলনা। তাহলে আপনাকে টার্গেটেড অডিয়েন্স এবং বয়স সেভাবে ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে নির্ধারণ করতে হবে। 

যেন ফেসবুক কর্তৃপক্ষ সঠিক অডিয়েন্সের কাছে আপনার পণ্যের বিজ্ঞাপনটি পৌঁছাতে পারে। মার্কেটিং করার জন্য অবশ্যই নির্দিষ্ট পরিমাণ ডলার ইনভেস্ট করতে হবে। সবচেয়ে বেশি ভালো ফলাফল পাওয়া যায় অ্যাড ক্যাম্পেইনে অ্যাড সেট পরিচালনা করার মাধ্যমে। একসঙ্গে যদি ৪ টি অ্যাড সেট পরিচালনা করা হয় সেক্ষেত্রে যদি ১ টি ভাল রেজাল্ট করে সেটিকে রেখে বাকি ৩ টি কে রিমুভ করলে সবচেয়ে বেশি সেল আনা সম্ভব। প্রিয় পাঠক আশা করি ফেসবুক মার্কেটিং কিভাবে করব এ বিষয়টিতে আপনারা ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং এবং পেইড ফেসবুক মার্কেটিং সম্পর্কে মূল্যবান তথ্য সম্বন্ধে অবগত হতে পেরেছেন।

ফেসবুক মার্কেটিং কিভাবে করব

আপনি যেকোনো একটি বিষয়ে যদি সফল হতে চান তাহলে সেই কাজ সম্বন্ধে পরিপূর্ণ জ্ঞান লাভ করতে হবে। যেমন ফেসবুক মার্কেটিং কি এ বিষয়টি জানার পাশাপাশি আপনি ফেসবুক মার্কেটিং করার প্রকার বা পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পারলেন। কিন্তু সেটি কিভাবে এপ্লাই করবেন সে সম্পর্কেও জানতে হবে। সুতরাং যে কোন একটি বিষয়ে যদি ভালো ফলাফল পেতে চান তাহলে নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে। নিয়মের বাইরে গিয়ে যদি ফেসবুক মার্কেটিং করতে চান সে ক্ষেত্রে অবশ্যই কাঙ্খিত ফলাফল আশা করা যাবে না। 
এজন্য ফেসবুক মার্কেটিং থেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সফলতা পেতে সঠিক নিয়ম গুলো ফলো করার চেষ্টা করুন। নিচে ফেসবুক মার্কেটিং কিভাবে করব এই প্রশ্নটিতে আমরা গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। নিচে ফেসবুক মার্কেটিং করার কিছু নিয়ম এবং তথ্যগুলো তুলে ধরা হলো।
  • সর্ব প্রথমে আপনাকে একটি প্রফেশনাল মানের ফেসবুক পেজ খুলতে হবে। ফেসবুক পেইজে আপনার ব্যবসা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য ইনপুট করতে হবে।
  • ফেসবুক পেজে প্রোফাইল পিকচার, কভার ফটো এগুলো প্রফেশনাল মানের হওয়ার পাশাপাশি আপনি কি ধরনের পণ্য অথবা সার্ভিস বিক্রি করতে চাচ্ছেন সে সম্পর্কে নির্দিষ্ট তথ্য জ্ঞাপন করতে হবে।
  • ফেসবুক পেজটি অবশ্যই সুন্দরভাবে সাজানো গোছানো হতে হবে যেন অডিয়েন্স দেখে আকর্ষণ বোধ করে এবং প্রোডাক্ট অথবা সার্ভিস সম্পর্কে দ্রুত অবগত হতে পারে।
  • আপনার ব্যবসা অথবা প্রতিষ্ঠান লোগো ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন প্রোফাইল পিকচারে। ব্যক্তিগত বা অন্য কোন ছবি ব্যবহার করলে সেটি প্রফেশনাল মানের হবে না।
  • সবকিছু সেটাপ করা হয়ে গেলে অন্য অথবা সেবার ব্যাপারে ক্যাপশন সহকারে নিয়মিত পোস্ট করতে হবে। অন্য অথবা সার্ভিসের ছবি এবং ভিডিও আকারে পোস্ট করতে পারেন।
  • সর্বশেষে আপনার পণ্য অথবা সেবার অডিয়েন্সের কথা মাথায় রেখে ফেসবুক মার্কেটিং শুরু করবেন। দেখবেন একটি সময় আপনি সফলতা অর্জন করতে পেরেছেন।
ফেসবুক মার্কেটিং এ সফল হওয়ার জন্য আপনাকে আরো কিছু বিষয় সম্পর্কে অবগত হওয়া উচিত। যেমন ধরুন আপনি যে ধরনের প্রোডাক্ট অথবা সার্ভিস প্রোভাইড করছেন সেগুলো কোন বয়সের লোকজনের জন্য প্রয়োজন সেটির তালিকা তৈরি করতে হবে। কেননা অ্যাড ক্যাম্পেইন যদি পরিচালনা করতে চান সে ক্ষেত্রে এ ধরনের তথ্য ইনক্লুড করে ক্যাম্পেইন পরিচালনা করতে হয়। আপনার পোস্টে যারা লাইক কমেন্ট করবে তারাই মূলত আপনার পণ্য অথবা সার্ভিসের ক্রেতা। সুতরাং তাদেরকে চিহ্নিত করে আপনার পোস্টগুলো পুনরায় সাজাতে পারেন। 

নিয়মিত আপনার পেজে পণ্য অথবা সেবার ব্যাপারে সকলকে আপডেট করার চেষ্টা করুন। একজন নতুন ফেসবুক মার্কেটার সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ে ফেসবুক মার্কেটিং কিভাবে করব এবং কিভাবে পরিচালনা করব। যারা আপনাকে ইনবক্সে মেসেজ করবে তাদেরকে কনভেন্স করার চেষ্টা করুন। দেখবেন একটি সময় আপনার পণ্যগুলো ধীরে ধীরে মার্কেটে বিক্রি হওয়া শুরু হয়েছে। এভাবে যদি আপনি আপনার ব্যান্ড দাঁড় করাতে পারেন তাহলে দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে আপনি একটি ভাল পর্যায়ে নিজেকে তুলে ধরতে পারবেন।

হাতে কলমে ফেসবুক মার্কেটিং

আপনি যদি হাতে কলমে ফেসবুক মার্কেটিং শিখতে চান তাহলে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ কিছু টিপস রয়েছে যেগুলো ফলোআপ করতে হবে। শুধুমাত্র এই গুরুত্বপূর্ণ টিপস গুলো যদি সঠিকভাবে অনুসরণ করতে পারেন তাহলে একটি সময় সফলতার মুখ দেখতে পারবেন। অনেকে রয়েছে যারা মনে করে আজকে থেকে হয়তো ফেসবুক মার্কেটিং শুরু করলে কালকে থেকেই পণ্য বিক্রি শুরু হয়ে যাবে এবং আপনি রাতারাতি কোটিপতি হয়ে যাবেন। কিন্তু বিষয়টি আসলে তা নয় আপনি অর্গানিক অথবা পেইড মেথড যেটাই ফলোআপ করুন না কেন একটি নির্দিষ্ট সময় আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে। 
ফেসবুক-মার্কেটিং-কিভাবে-করব
তবে ফ্রি মার্কেটিং এর চাইতে পেইড মার্কেটিং এর দ্রুত সফলতা পাওয়া যায় এটা সঠিক। কিন্তু ফ্রি মার্কেটিং করে যদি আপনি এক বছর পরেও সফলতা অর্জন করতে পারেন তাহলে সেখানে আপনার কোন টাকা ইনভেস্ট করতে হচ্ছে না। বরং যে টাকা আপনি সেল করতে পারবেন লভ্যাংশ পুরোটাই আপনার থেকে যাচ্ছে। কিন্তু যখন আপনি পেইড মেথডে পণ্য সেল করা শুরু করবেন তখন লভ্যাংশ থেকে আপনাকে প্রতিদিন ক্যাম্পেইন পরিচালনা করার জন্য ডলার ইনভেস্ট করতে হবে। চলুন তাহলে এবার ফেসবুক মার্কেটিং কিভাবে করব এ বিষয়টি আরো ভালোভাবে জানার জন্য আমরা কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস সম্পর্কে জেনে নিব।

নির্দিষ্ট লক্ষ্য স্থিরঃ ফেসবুক মার্কেটিং নিয়ে সফলতা অর্জন করার জন্য অবশ্যই দীর্ঘমেয়াদি একটি লক্ষ্য স্থির করতে হবে। যেহেতু কোন কিছুই শর্টকাটে করা সম্ভব নয়। তাই আপনি আপনার কনটেন্ট, পোস্ট, ব্রান্ড প্রমোশন যাতে লম্বা সময় ধরে পরিচালনা করা যায় সে বিষয়টি নির্ধারণ করুন।

কনটেন্টঃ প্রত্যেকটি বিষয়ের মূলে থাকে কনটেন্ট, আপনাকে কনটেন্ট ক্রিয়েশনের দিকে ফোকাস করতে হবে। আপনি প্রোডাক্টের রিভিউ কিভাবে দিচ্ছেন, কিভাবে উপস্থাপন করছেন সবকিছুতে নতুনত্ব নিয়ে আসার চেষ্টা করুন। কোয়ালিটি ফুল কন্টেন্ট প্রোডাক্ট সেল করার জন্য সবচেয়ে বেশি কার্যকর বলে বিবেচিত।

উপস্থাপনাঃ ফেসবুক মার্কেটিং এ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে কোয়ালিটি ফুল কনটেন্ট এবং তার সাথে উপস্থাপন। শুধু আমাদের বক্তব্য নয় যারা পূর্বে থেকে কন্টেন্ট এবং প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করছেন তাদের কাছ থেকে এ ধরনের তথ্য পাওয়া গেছে। আপনার পণ্য অথবা সার্ভিসটি গ্রহণ করে গ্রাহক কিভাবে উপকৃত হবে আপনার উপস্থাপনে সেটি ফুটে উঠতে হবে।

অডিয়েন্সঃ আপনি যদি আসলেই ফেসবুক মার্কেটিং থেকে ভালো কিছু করতে চান সে ক্ষেত্রে আপনার পোস্ট এবং অফারের ক্ষেত্রে সব সময় অডিয়েন্সদের কে আপডেট রাখতে হবে। পাশাপাশি ধারাবাহিকতা অনুযায়ী নিয়মিত ছবি এবং ভিডিও আকারে পণ্য অথবা সার্ভিসের বিজ্ঞাপন গুলো প্রচার করতে থাকুন।

যোগাযোগঃ শেষ কথায় আপনি আপনার পণ্য অথবা সার্ভিসের অডিয়েন্সদের সাথে সবসময় যোগাযোগ বজায় রাখার চেষ্টা করুন। কোনভাবেই আপনার অডিয়েন্সদের প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যাবেন না। সকল ধরনের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করুন, সক্রিয় থাকুন, নিয়মিত কাজ করুন, সময় দিন একটি সময় সফলতা আসবেই।

ফেসবুক মার্কেটিং করে ইনকাম

আপনি যদি ফেসবুক মার্কেটিং কি এবং ফেসবুক মার্কেটিং স্টার্টেজি কিভাবে পরিচালিত হচ্ছে সেটি অবলোকন করতে পারেন তাহলে ফেসবুক থেকে ইনকাম করা আপনার জন্য অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে। আমরা ইতিমধ্যে আর্টিকেলের উপরের অংশে ফেসবুক মার্কেটিং কিভাবে করব এই বিষয়টিতে গুরুত্বপূর্ণ সকল ধরনের টিপস এবং তথ্য প্রোভাইড করার চেষ্টা করেছি। আপনি চাইলে পুনরায় সেগুলো পড়তে পারেন এবং আরও জ্ঞান অর্জন করতে পারেন। ফেসবুক মার্কেটিং শেখার পরে আপনি বিভিন্ন উপায়ে ইনকাম করতে পারবেন। 
বর্তমান সময়ে অনলাইন দুনিয়ায় আয় করার অন্যতম একটি মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে ফেসবুক প্ল্যাটফর্মটি। আপনি যদি আপনার দক্ষতাগুলো ফেসবুক মার্কেটিং এ কাজে লাগাতে পারেন তাহলে অনায়াসে এখান থেকে লক্ষ টাকা ইনকাম করা সম্ভব। অবশ্যই আপনাকে সময়, অর্থ, ধৈর্য, পরিশ্রম সবকিছুকে কাজে লাগিয়ে নির্দ্বিধায় কাজ করে যেতে হবে। একটু সময় দেখবেন আপনি ফেসবুক থেকে অনেক টাকা ইনকাম করতে সক্ষম হচ্ছেন। নিচে ফেসবুক মার্কেটিং করে আয় করার কয়েকটি উপায় আপনাদের সাথে শেয়ার করা হলো।
  • ফেসবুক মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে প্রথম উপায় হিসেবে আপনি ফ্রি মার্কেটিং মেথড এপ্লাই করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার পেইজে প্রচুর পরিমাণ ফলোয়ার থাকতে হবে। পেজে যদি অধিক ফলোয়ার থাকে তাহলে সেখানে পন্য অথবা সার্ভিসের অডিয়েন্সের কাছে প্রচার প্রচারণা বেশি পাওয়া যায়।
  • আপনি যদি ফেসবুক মার্কেটিং এক্সপার্ট হয়ে থাকেন তাহলে অনেক সময় যারা ফেসবুক পণ্য প্রচার-প্রচারণার জন্য পোস্ট করে থাকে, তাদের সাথে যোগাযোগ করেও টাকা ইনকাম করতে পারবেন। যদি কোন সেলিব্রেটি তার কোন পণ্যের প্রচার প্রচারণার জন্য লোক খুঁজে তাহলে আপনি সে কাজটি করেও টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
  • ফেসবুক মার্কেটিং করে যদি টাকা আর্নিং করতে চান সে ক্ষেত্রে অনলাইন স্টোরের প্রমোশন করতে পারেন। যে সকল কোম্পানি তাদের প্রোডাক্ট বিক্রি করতে চাচ্ছে তাদের পোস্টগুলো আপনি শেয়ার করে এবং বিভিন্ন গ্রুপে পোস্ট করে এ ধরনের টাস্ক কমপ্লিট করেও টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
  • ফেসবুকে ভিডিও আপলোড করে ও কিন্তু টাকা ইনকাম করা সম্ভব। ফেসবুকে ভিডিও আপলোড করে টাকা ইনকাম করার চিন্তা করলে আপনি আমাদের ওয়েবসাইটে একটি ফুল আর্টিকেল পেয়ে যাবেন। আর্টিকেলটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন। আপনার পেজ যদি মনিটাইজেশন অন হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে ভিডিও আপলোড করে টাকা ইনকাম করা সম্ভব।
  • আপনি যদি একটি প্রফেশনাল মানের ফেসবুক পেজ তৈরি করেন এবং সেটি মনিটাইজেশন অন থাকে তাহলে অনেক টাকায় সেটি বিক্রি করতে পারবেন। এজন্য আপনাকে প্রথমে ফলোয়ার গেইন করতে হবে এবং তারপরে আপনি সেটি সেল করতে পারবেন।
  • ফেসবুক মার্কেটিং শিখলে আপনি অন্যের কাজ ব্যতীত নিজেই আপনার নিজস্ব পণ্য সেল করার ট্রাই করতে পারেন। যদি ব্র্যান্ড ভ্যালু ক্রিয়েট করতে পারেন তাহলে নিশ্চয়ই একটি সময় আপনার পণ্য বিক্রি হওয়া শুরু হবে এবং আপনি অধিক লাভবান হতে পারবেন।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক বৃন্দ আশা করি আপনারা আজকে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে ফেসবুক মার্কেটিং কি এবং ফেসবুক মার্কেটিং কিভাবে করব এ বিষয়গুলো সম্পর্কে সঠিক তথ্যগুলো পেয়েছেন। আপনাদের কে আবারো বলছি ফেসবুক মার্কেটিং নিয়ে যদি কাজ করতে চান তাহলে অবশ্যই সে সম্পর্কে অবগত হয়ে নিন। আপনাকে ফেসবুক মার্কেটিং সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করতে হবে। আপনি যদি স্কিল সম্পূর্ণ ভালো ফেসবুক মার্কেটার হতে পারেন তবেই সফলতা অর্জন করা সম্ভব। অন্যান্য কাজে শেখার পরে যদি এপ্লাই করতে না পারেন তাহলে আপনার পুরো বিষয়টাই ভেস্তে যায়। 

কিন্তু আপনি যদি ফেসবুক মার্কেটিং শিখেন তাহলে অন্যের কাজের পাশাপাশি নিজেরও ব্যবসা দাঁড় করানোর চেষ্টা করতে পারেন। আর আপনার এ প্রচেষ্টাকে আরো একধাপ এগিয়ে নিতে আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে ফ্রিল্যান্সিং টিপস এবং অনলাইন ইনকাম রিলেটেড বিভিন্ন আর্টিকেল পাবলিশ করে থাকি। আপনি চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করে এরকম মূল্যবান তথ্য সমৃদ্ধ আর্টিকেল সহজেই পেতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url