নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং-নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সেরা মার্কেটপ্লেস কোনটি
নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সেরা মার্কেট প্লেস কোনটি এটা জানা একজন নতুন ফ্রিল্যান্সারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। একজন নতুন ফ্রিল্যান্সার যখন মাত্র ফ্রিল্যান্সিং জগতে প্রবেশ করে বা হাতে খড়ি হয় তখন তাদেরকে মার্কেটপ্লেস থেকে বায়ার হান্টিং শুরু করতে হয়। সুতরাং আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং জগতে পা রাখেন সেক্ষেত্রে যে বিষয়ে আপনি নিজেকে দক্ষ করে তুললেন, সেই অনুযায়ী ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস গুলোতে আপনার একটি প্রফেশনাল মানের একাউন্ট থাকতে হবে।
অর্থাৎ সেই একাউন্ট এর পরিপ্রেক্ষিতে বায়ার আপনাকে কাজের অর্ডার দেবে। ধরুন আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইন নিয়ে দক্ষতা অর্জন করলেন। তাহলে মার্কেটপ্লেস থেকে কিভাবে একাউন্ট ক্রিয়েট করার মাধ্যমে এবং নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সেরা মার্কেটপ্লেস কোনটি এ বিষয়গুলো জানার মাধ্যমেই কেবল বায়ার থেকে কাজের অর্ডার নেওয়া সম্ভব। তাই সে সকল বেসিক লেভেলের ফ্রিল্যান্সারদের কথা ভেবেই আজকে আমরা এই আর্টিকেলে মার্কেটপ্লেস সমন্ধে সকল তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করব।
উক্ত বিষয়টি বাদে আরো যে সকল বিষয় সম্পর্কে আজকে জানতে পারবেন সেগুলো হল নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং করতে কোন কোন বিষয় নজরদারি করতে হবে এবং ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে এ টু জেড ধারণা দেওয়া হবে। সুতরাং ফ্রিল্যান্সিং সম্বন্ধে নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সেরা মার্কেটপ্লেস কোনটি এ বিষয়গুলো জানতে অবশ্যই আর্টিকেলে শেষ পর্যন্ত বহাল থাকুন।
পোস্ট সূচিপত্র
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস কি
ফ্রিল্যান্সিং হল একটি মুক্ত পেশার যেখানে একজন ব্যক্তি তার স্বাধীন ভাবে কাজের সুযোগ থাকে। পাশাপাশি একজন ফ্রিল্যান্সার যে জায়গা থেকে কাজের অর্ডার গ্রহণ করে থাকে সেটি মূলত ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস। সোজা কথায় বললে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস হলো একটি অনলাইন প্লাটফর্ম যেখান থেকে একজন ফ্রিল্যান্সার ক্লায়েন্ট খুঁজে পায় এবং একজন ক্লায়েন্ট তার চাহিদা মত ফ্রিল্যান্সার খুঁজে পায়। সুতরাং বায়ার এবং সেলারের মধ্যে একটি যোগাযোগ এবং সম্পর্ক স্থাপনের কাজ করে থাকে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলো। ফ্রিল্যান্সাররা তাদের নির্দিষ্ট দক্ষতা অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের সার্ভিস বা সেবা প্রদান করে থাকে।
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস গুলোতে যে ধরনের কাজের চাহিদা রয়েছে সেগুলো হলো Web Design, Content Writing, Programming, Data Entry, Graphics Design, Digital Marketing, SEO বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। সাধারণত ক্লায়েন্টরা এ ধরনের বিষয়ের উপর যারা এক্সপার্ট তাদেরকেই ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস গুলো থেকে হায়ার করে থাকে। একজন ফ্রেসার বা নতুন ফ্রিল্যান্সারের সর্বপ্রথমে মার্কেটপ্লেস সম্বন্ধে ধারণা নিতে হয়। কেননা আপনি যদি নিজেই একজন ফ্রিল্যান্সার হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই কাজ শেখার পরে কাজের খোঁজ করতে চাইবেন।
সুতরাং নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সেরা মার্কেটপ্লেস কোনটি এ বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মার্কেটপ্লেস সম্বন্ধে জানানোর পাশাপাশি নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং করার ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়গুলো জানতে হবে সেটিও আজকে আপনাদের মাঝে তুলে ধরা হবে।
নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সেরা মার্কেটপ্লেস কোনটি
ডিজিটাল যুগে এসে এখন ঘরে বসেই ফ্রিল্যান্সিং করে প্রতি মাসে লক্ষ টাকা ইনকাম করা সম্ভব এই নিউজগুলো আমরা হরহামেশাই দেখে থাকি। আপনি যদি বেকার না থেকে ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা ইনকাম করতে চান তাহলে সর্বপ্রথমে অবশ্যই আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের যে কোন একটি বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। মনে রাখতে হবে আপনার কাজের মানের উপরে আর কিছু হয় না। যদি সঠিক গাইডলাইন অনুযায়ী নিজেকে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন তাহলে মার্কেটপ্লেস থেকে আপনার কাজের অভাব হবে না।
তবে মার্কেটপ্লেস থেকে কাজের অর্ডার নিতে হলে আপনাকে সেই লেভেলের কাজ শিখতে হবে। বেসিক ধারণা বা বেসিক লেভেল এর কাজ দিয়ে হয়তো আপনি অল্প কিছুদিন টাকা আর্নিং করতে পারবেন। কিন্তু ভবিষ্যতে এখান থেকে যেন আপনার আরও ভালো আর্নিং হতে পারে সে বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য নিজেকে এক্সপার্ট হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। আপনি ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের যে কোন একটি নিশ নিয়ে কাজ করবেন। নির্দিষ্ট একটি সময় পর আপনি সেই বিষয়ে যদি এক্সপার্ট হতে পারেন তাহলেই আপনার শুরু হবে মার্কেটপ্লেসের নতুন যাত্রা।
আপনার সেই শুভযাত্রাকে আরও একধাপ এগিয়ে নিতেই আজকে আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। একজন বেসিক লেভেলের ফ্রিল্যান্সারের অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সেরা মার্কেটপ্লেস কোনটি এই বিষয়টি। নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং জগতে সাকসেসফুল হতে মার্কেটপ্লেস গুলোতে প্রফেশনাল মানের একাউন্ট ক্রিয়েট করার বিকল্প আর অন্য কিছু নেই। চলুন তাহলে আজকে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস তালিকা
অনেকেই লেখাপড়া শেষ করে চাকরির পেছনে না ঘুরে তারা ফ্রিল্যান্সিং করে প্রতি মাসে লক্ষ টাকা ইনকাম করে। আপনি যদি একটি চাকরি ম্যানেজ করতে চান তাহলে অবশ্যই বিভিন্ন অফিসে ঘুরে ঘুরে সিভি জমা দিয়ে পরিশেষে চাকরি পেতে পারেন। কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে আলাদা। এখানে চাকরির জন্য আপনাকে বিভিন্ন অফিসে ঘুরতে হয় না। কাজ শেখার পর আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে অর্থাৎ অনলাইন প্লাটফর্ম গুলোতে কাজের জন্য তালাশ করতে হয়।
ফ্রিল্যান্সিং কাজ পাওয়ার জন্য অনেকগুলো জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস রয়েছে। অনেক মার্কেটপ্লেস রয়েছে যেখানে বায়ার তাদের কাজের বিষয়টি পোস্ট করে এবং ডিটেলস আকারে সবকিছু বলা থাকে। পরবর্তীতে ফ্রিল্যান্সাররা সেখানে বিড করে কাজের অর্ডার নিয়ে নেয়। নিচে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস গুলোর তালিকা এবং তাদের বিস্তারিত বর্ণনা করা হলো।
- Fiverr
- Upwork
- Guru
- SEO Clark
- Freelancer.com
- Kwork
- People Per Hour
- Legit
- 99 Designs
- Toptal
ফাইবার (Fiverr)
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস গুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় প্লাটফর্ম হল ফাইবার। ফাইবার পরিচিত হওয়ার পর থেকেই এখন পর্যন্ত তারা তালিকার সবচেয়ে উপরে অবস্থান করছে। বলাবাহুল্য যে ফাইবারের জনপ্রিয়তা লাভ করার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এখানে সকল ধরনের কাজের সুযোগ থাকা। পাশাপাশি বড় থেকে ছোট ছোট প্রজেক্ট এ কাজ পাওয়ার সুযোগ রয়েছে ফাইবার মার্কেটপ্লেসে। যেহেতু একজন নতুন ফ্রিল্যান্সার প্রথম অবস্থায় অবশ্যই বড় কোন প্রজেক্টে কাজ করতে পারবে না।
সেজন্য ছোট ছোট প্রজেক্টে কাজ করার অভিজ্ঞতা ক্লাস ইনকাম করার জন্য নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সেরা মার্কেটপ্লেস কোনটি এই তালিকাতে ফাইবারকে সর্বপ্রথমে স্থান দেওয়া হয়েছে। সুতরাং একজন নতুন ফ্রিল্যান্সারের বেস্ট অপশন হতে পারে ফাইবার মার্কেটপ্লেসে অ্যাকাউন্ট ক্রিয়েট করা। ফাইবার মার্কেটপ্লেসে আপনি ডাটা এন্ট্রি থেকে শুরু করে ওয়েব ডিজাইন সকল ধরনের কাজ পেয়ে যাবেন। সুতরাং অনলাইন ইনকাম করার জন্য সর্ব প্রথমে আপনাকে কাজে দক্ষতা হওয়ার পরে কেবলমাত্র ফাইবারে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে।
ফাইবার মার্কেটপ্লেসের আরও একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এখানে আপনাকে নিজে বায়ার খুঁজতে হবে না। আপনার GIG যদি র্যাংকে থাকে সেক্ষেত্রে বায়ার নিজেই আপনাকে মেসেজ করবে। আপনি যে কাজে নিজেকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলেছেন সেই অনুযায়ী ফাইবারে গীগ আপলোড করতে হবে।
আপ ওয়ার্ক (up work)
ফাইবার মার্কেটপ্লেস এর পরে যদি আরেকটি মার্কেটপ্লেসের কথা বলা হয় সে ক্ষেত্রে চলে আসবে আপ ওয়ার্ক মার্কেটপ্লেস এর কথা। উক্ত মার্কেটপ্লেসটির নাম পূর্বে ছিল ওডেক্স (Odex)। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সিকিউর এবং প্রফেশনাল মার্কেটপ্লেস বলা হয় upwork মার্কেটপ্লেসকে। এখানে প্রচুর পরিমাণে প্রফেশনাল বায়ার এর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় যার কারণে আপনি বেসিক লেভেলের কাজ শিখে এখান থেকে অর্ডার পাবেন না। আপনি যে কাজে দক্ষ সে অনুযায়ী নিজের কাজ খুঁজে কানেক্ট এর মাধ্যমে এপ্লাই করতে হয়।
পরবর্তীতে বায়ার প্রোপজাল গুলো চেক করে সবচেয়ে বেস্ট এবং অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সারকে হায়ার করে থাকে। সুতরাং এখানে ছোট ছোট প্রজেক্ট বা সহজ কোনো কাজ পাওয়া খুব একটা যায় না। সুতরাং আপনি যদি এই মার্কেটপ্লেস থেকে কাজ পেতে চান তাহলে অবশ্যই নিজেকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। যদি নিজেকে দক্ষ হিসেবে সেই লেভেলের করতে পারেন তবেই আপ ওয়ার্ক থেকে অবশ্যই কাজের অর্ডার পেয়ে যাবেন। upwork মার্কেটপ্লেস এর আরো একটি বৈশিষ্ট্য হলো এখানে আপনি ঘন্টা চুক্তি হিসেবে কাজ করতে পারবেন।
প্রজেক্টের ধরন এর উপর নির্ভর করে কিভাবে সেটি কমপ্লিট করতে হবে তা আপনাকে বায়ার সাজেস্ট করবে। তবে প্রজেক্টের ভিত্তিতে আপনি ঘন্টা চুক্তি অথবা এককালীন রেটে কাজের পেমেন্ট নিতে পারবেন। তবে আমরা সাজেস্ট করব নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার ক্ষেত্রে ফাইবার মার্কেটপ্লেস দিয়ে শুরু করা উচিত।
গুরু (Guru)
ফাইবার এবং আপওয়ার্ক মার্কেটপ্লেস গুলোর মতই আরো একটি ইন্টারন্যাশনাল ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস হল গুরু। নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সেরা মার্কেটপ্লেস কোনটি এই তালিকাতে আমরা Guru.com কে তৃতীয় নম্বরে রেখেছি। এই মার্কেট প্লেসটিতে সবচেয়ে ভিডিও এডিটিং, ওয়েব ডেভলপমেন্ট এবং ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। এছাড়াও রাইটিং, প্রোগ্রামিং সহ আরো অন্যান্য ধরনের সকল কাজ এই মার্কেটপ্লেসে পাওয়া যায়। গুরু অনলাইন প্লাটফর্মটিতে up work এর মতই জব পোস্ট করা হয়।
অর্থাৎ বায়ার তাদের কাজের বিবরণ দিয়ে একটি জব পোস্ট করে থাকে। পরবর্তীতে গুরু এর একাউন্টধারীরা কাজ পাওয়ার জন্য বিড করে। পরবর্তীতে বায়ার যাচাই-বাছাই করে তাদের পছন্দ অনুযায়ী একজন ফ্রিল্যান্সারকে হায়ার করে থাকে। এককালীন এবং ঘন্টা চুক্তি দুইভাবেই কাজের পেমেন্ট করা হয়ে থাকে। Guru এ মার্কেটপ্লেসটি অনেক শক্ত নিয়ম-কানুন পালন করে থাকে। যদি আপনি কোন রকম স্প্যাম করার চেষ্টা করেন তাহলে আপনার একাউন্টটি ব্যান করা হবে। গুরু মার্কেটপ্লেস থেকে পেপাল, ব্যাংক ট্রান্সফার এবং পিওনিয়ার এর মাধ্যমে আপনি আপনার পেমেন্ট উইথড্র করতে পারবেন।
এসইও ক্লার্ক (SEO Clark)
এসইও ক্লার্ক এই মার্কেটপ্লেসটি অনেকটাই আন্ডার রেটেড। সুতরাং নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সেরা মার্কেটপ্লেস কোনটি এ বিষয়টিতে আপনি এখান থেকে খুব সহজেই কাজ পেতে পারেন। আমরা সাজেস্ট করব নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে হলে একটি নির্দিষ্ট কাজের দক্ষতা অর্জন করার পর এই মার্কেট প্লেসটিতে ট্রাই করতে পারেন। যেহেতু যারা টপ রেটেড freelancer তারা এ ধরনের মার্কেটপ্লেসগুলোতে খুব একটা কাজের চাহিদা প্রকাশ করে না। সুতরাং আপনি যদি কোন একটি কাজে দক্ষতা অর্জন করতে পারেন তাহলে SEO Clark এই মার্কেট প্রেসটিতে একটি অ্যাকাউন্ট খুলে কাজের জন্য খোঁজাখুঁজি করতে পারেন।
এই মার্কেটপ্লেসটি অনেকটা ফাইবারের মতো কাজ করে। আপনি আপনার নির্দিষ্ট কাজের দক্ষতা অনুযায়ী একটি গিগ তৈরি করবেন। গীগ আপলোড করার পরে আপনার কাজের চাহিদা অনুযায়ী বায়ার আপনাকে মেসেজ করবে। পরবর্তীতে যদি আপনি সেখানে নিয়মিত একটিভ থাকতে পারেন তাহলে আশা করা যায় এই মার্কেটপ্লেস থেকে সহজেই কাজের অফার পেয়ে যাবেন।
ফ্রিল্যান্সার ডট কম (Freelancer.com)
ফ্রিল্যান্সার ডট কম এই মার্কেট টেস্টের কথা আমরা অনেকেই শুনে থাকি। বিশেষ করে যারা নতুন হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং জগতে পা রেখেছে তারাও ফাইবারের পাশাপাশি এই মার্কেটপ্লেসটির নাম অবশ্যই শুনে থাকবে। কেননা freelancer.com এ মার্কেটপ্লেসটি অনেক পুরাতন একটি মার্কেটপ্লেস। এই প্লাটফর্মটিতে সর্বমোট প্রায় ২ হাজারের মতো ফ্রিল্যান্সিং ক্যাটাগরি রয়েছে। অর্থাৎ এত এত কাজের ক্যাটাগরি এবং অফার রয়েছে যদি আপনি সঠিক দক্ষতা অর্জন করতে পারেন তাহলে অবশ্যই এই মার্কেট থেকে কাজের সুযোগ পাবেন। গত ১৫ বছর ধরে ফ্রিল্যান্সার ডট কম এই মার্কেটপ্লেসটি সফলতার সাথে সারা বিশ্বের ফ্রিল্যান্সারদের সাহায্য করে যাচ্ছে।
হিসেব অনুযায়ী প্রায় ১ কোটির বেশি জব পোস্ট করা রয়েছে এই মার্কেট প্লেসে রয়েছে। এখানেও আপনি এককালীন অথবা ঘন্টা চুক্তিতে কাজের পেমেন্ট পেয়ে যাবেন। ফ্রিল্যান্সার ডট কম এই মার্কেটপ্লেসটিতে আরও একটি সুযোগ হল এখানে নিয়মিত কনটেস্ট আয়োজন করা হয়। সে ধরনের কনটেস্টে অংশগ্রহণ করেও আপনি কাজের অফার পেয়ে যেতে পারেন। কনটেস্টে যারা অংশগ্রহণ করে তাদের মধ্যে বিজয়ীদের বায়ার এর পক্ষ থেকে কাজের অফার করা হয়। প্রাইস মানি হিসেবে পুরো প্রজেক্টের পেমেন্ট প্রদান করা হয়ে থাকে।
কেওয়ার্ক (Kwork)
আমরা উপরের অংশে উল্লেখ করেছিলাম যে নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সেরা মার্কেটপ্লেস কোনটি এই বিষয়টিতে এসইও ক্লার্ক এই মার্কেটপ্লেসটিতে ট্রাই করা যাবে। উক্ত মার্কেটপ্লেসটির মতো আরও একটি আন্ডারেটেড মার্কেটপ্লেস হলো কেওয়ার্ক। অনেকেই এ ধরনের ছোট মার্কেটপ্লেস গুলোতে কাজ করার ইচ্ছা পোষণ করে না। আর এটাই একজন নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং করার অন্যতম সুযোগ। যেখানে প্রতিযোগিতা কম রয়েছে নতুন ফ্রিল্যান্সারদের সেখানে চেষ্টা করা উচিত। Kwork একটি রাশিয়া থেকে পরিচালিত অনলাইন প্লাটফর্ম যেখানে আপনি এসইও রিলেটেড আজ থেকে শুরু করে সকল ধরনের ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের কাজ পেয়ে যাবেন।
এই মার্কেটপ্লেসটির আরও একটি বড় সুবিধা হল আপনাকে ঘন্টার পর ঘন্টা অ্যাক্টিভ থাকতে হবে না। নির্দিষ্ট একটি সময়ে একটিভ থাকার পাশাপাশি বায়ার আপনাকে মেসেজ করবে। যার পরিপেক্ষিতে আপনি কাজের সুযোগ পেয়ে থাকবেন। তবে অবশ্যই এখানেও আপনাকে প্রফেশনাল মানের গিগ আপলোড করতে হবে। গিগে যদি আপনি আপনার সঠিক ইনফরমেশন তুলে ধরতে পারেন তাহলে বায়ার অবশ্যই আপনাকে কাজের অফার দেবে।
পিপল পার আওয়ার (People Per Hour)
পিপল পার আওয়ার এই অনলাইন প্লাটফর্ম বা মার্কেটপ্লেস তাদের যাত্রা শুরু করে ২০০৭ সাল থেকে। তখন থেকে ২০২৪ এ এসেও তারা তাদের সার্ভিস এবং কাজের মান ধরে রেখেছে। এই মার্কেটপ্লেসটিতে বর্তমান সময়ে প্রায় ৩ মিলিয়ন এরও বেশি দক্ষ ফ্রিল্যান্সার তালিকাভুক্ত রয়েছে। তাহলে বুঝতে পারছেন যারা নতুন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে মার্কেটপ্লেসে আসতে চাচ্ছেন তাদের জন্য এই ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসটি কতটা কঠিন হতে পারে। তাই আপনাকে এই ধরনের মার্কেটপ্লেস থেকে প্রথমেই কাজের অর্ডার পাওয়ার বিষয়ে একটু ধৈর্য ধারণ করতে হবে।
নিরাশ না হয়ে যদি আপনি এখানেও সময় ইনভেস্ট করতে পারেন তাহলে দেখা যাবে একটি সময় আপনিও এই মার্কেটপ্লেস থেকে কাজের অর্ডার পাচ্ছেন। পিপল পার আওয়ার এই মার্কেটপ্লেসটির সবচেয়ে বড় একটি সুবিধা হল এখানে আপনি আপনার নিজের সার্ভিস বিক্রি করতে পারবেন। অর্থাৎ বায়ারের পোস্ট করা কাজে এপ্লাই করার পাশাপাশি নিজেই সার্ভিস বিক্রি করার সুযোগ রয়েছে এই মার্কেট প্লেসটিতে।
লেজিট (Legit)
অনেকেই লেজিট এই মার্কেটপ্লেসটির কথা শুনে থাকবেন আবার অনেকের কাছে এই মার্কেট প্লেসটির নাম নতুন হতে পারে। কেননা আজকের এই আর্টিকেলের মূল বিষয় ছিল নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সেরা মার্কেটপ্লেস কোনটি। আমরা সেখানে ফাইবার (Fiverr), কেওয়ার (Kwork) এবং এসইও ক্লার্ক (SEO Clark) এই মার্কেটপ্লেস গুলোর কথা বলেছিলাম। এখানে আরও একটি মার্কেটপ্লেস এর কথা বলা হচ্ছে সেটি হল লেজিট (Legit)। যেহেতু অনেকেই এ ধরনের মার্কেটপ্লেস এর কথা খুব একটা জানেনা বা জনপ্রিয় নয়। তাই আপনি যদি নতুন অবস্থায় কাজের অর্ডার পেতে চান তাহলে অবশ্যই এই ধরনের ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে কাজের সন্ধান করতে পারেন।
যেহেতু এখানে প্রতিযোগিতা আপাতত কম রয়েছে তাই আপনি খুব সহজেই কাজের অর্ডার পাবেন। যেহেতু এ ধরনের মার্কেটপ্লেসগুলো ধীরে ধীরে তাদের প্রসার বৃদ্ধি করছে তাই অদূর ভবিষ্যতে এখানেও কাজের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে। দেখা যাবে একসময় এখানেও কানেক্ট ক্রয় করে অথবা বিডিং করার মাধ্যমে কাজের অর্ডার নিতে হচ্ছে। তবে আপাতত যেহেতু এখানে সেরকম কোন কম্পিটিশন নেই তাই আপনি আপনার ধৈর্য,মেধা, সময় সবকিছু এখানে বিনিয়োগ করতে পারেন।
৯৯ ডিজাইন (99 Design)
যারা গ্রাফিক্স ডিজাইন নিয়ে কাজ করতে চাচ্ছেন তাদের ক্ষেত্রে অন্যতম একটি মার্কেটপ্লেস হলো ৯৯ ডিজাইন এই মার্কেট প্লেসটি। সুতরাং একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার যে নতুন অবস্থায় কাজের সন্ধান করছে তাদের ক্ষেত্রে এই মার্কেট প্লেস অন্যতম ভূমিকা পালন করবে। সুতরাং নতুন গ্রাফিক্স ডিজাইনার বা নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সেরা মার্কেটপ্লেস কোনটি এই প্রশ্নটিতে অবশ্যই ৯৯ ডিজাইন মার্কেটপ্লেসটিতে কাজের সন্ধান করা যেতে পারে। এই মার্কেটপ্লেসটিতে ডিজাইন সম্পর্কিত সব ধরনের কাজ পাওয়া যাবে।
তবে এই মার্কেটপ্লেসটিতে শুধুমাত্র ডিজাইন সম্পর্কিত যারা কাজ করে থাকে তারাই আসে। অন্যান্য সেক্টর এর ফ্রিল্যান্সাররা খুব একটা এ ধরনের মার্কেট রয়েছে আসেনা। আপনি যদি গ্রাফিক্স ডিজাইন রিলেটেড কাজ যেমন ওয়েব পেজ ডিজাইন, লোগো ডিজাইন, টি-শার্ট ডিজাইন, পোস্টার ডিজাইন, সোশ্যাল মিডিয়া কনটেন্ট ডিজাইন, প্রোডাক্ট প্যাকেজিং, বুক কভার ডিজাইন এ ধরনের কাজ করতে চান তাহলে এই মার্কেটটিতে একাউন্ট খুলতে পারেন। এই মার্কেটপ্লেসটিতে ফায়ার তার কেমন ডিজাইন লাগবে তার একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়ে জব পোস্ট করে।
পরবর্তীতে বিবরণ অনুযায়ী ডিজাইনাররা তাদের ডিজাইনগুলো সাবমিট করে। সাবমিট করা ফাইল থেকে যার ডিজাইনটি বায়ার পছন্দ করে তাকেই পেমেন্ট করা হয়। বাকি যারা ডিজাইন সাবমিট করেছে তাদেরকে কোনরকম পেমেন্ট করা হয় না। অর্থাৎ এখান থেকে টাকা ইনকাম করতে হলে আপনাকে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হবে।
টপ টাল (Top Tal)
টপ টাল একটি প্রফেশনাল ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস হিসেবে বিবেচিত। সকল ধরনের ফ্রিল্যান্সিং এর কাজের সুযোগ রয়েছে এই মার্কেট প্লেসে। এই মার্কেটপ্লেসের আরও একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এখানে সকল ধরনের বিষয়গুলো প্রফেশনাল পদ্ধতি অনুযায়ী নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এখানে কাজের সুযোগ পাওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন হতে হবে। ফাইবারে যেমন গীগ আপলোড করার সময় ইংলিশ কমিউনিকেশন স্কিল টেস্ট দিতে হয়। ঠিক তেমনি টপ টাল মার্কেটপ্লেসে অ্যাকাউন্ট করতে চাইলে আপনাকে একটি পরীক্ষা দিতে হবে। সেটিকে বলা হচ্ছে স্ক্রিনিং।
সুতরাং নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সেরা মার্কেটপ্লেস কোনটি এখানে টপ টাল মার্কেটপ্লেস একটু কঠিন হতে পারে। মার্কেটপ্লেসটিতে একাউন্ট খোলার সময় তারা তাদের ওয়েবসাইটে এক্সেস দেওয়ার জন্য আপনার সম্পর্কে সকল ধরনের পারমিশন নেবে। এই পারমিশন নেওয়ার উদ্দেশ্য হল তারা আপনার সম্পর্কে সবকিছু পরিষ্কার ধারণা নিতে চায়। মার্কেট প্লেসটিতে একাউন্ট খোলার জন্য আপনি যখন অ্যাপ্লিকেশন করবেন সেখান থেকে যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে আপনাকে নেওয়া হবে। হাজার হাজার অ্যাপ্লিকেশন বাছাই করে তারপর উপযুক্ত লোক নির্বাচন করা হয়।
তাই আপনি যদি এখানে একবার নির্বাচিত হতে পারেন তাহলে কাজের আর টেনশন করতে হবে না। যেহেতু এখানে দক্ষ এবং অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ফ্রিল্যান্সার নিযুক্ত করা হয় সে জন্য বায়ারদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে টপ টাল এই মার্কেটপ্লেসটি। তবে টপ টাল এই মার্কেটপ্লেসটিতে নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং করা একটু কঠিন হতে পারে।
নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং
যেহেতু বর্তমান সময়ে বিশ্বজুড়ে ফ্রিল্যান্সিং একটি জনপ্রিয় কর্মক্ষেত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পাশাপাশি ইন্টারনেটে সহজলভ্যতা এবং প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে উন্নত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ঘরে বসেই আপনি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চাকরির সুযোগ পেয়ে যাচ্ছেন। যারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে ইচ্ছুক তাদের ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং বিষয়টি অনেকটাই আগ্রহের শীর্ষে। অনেকেই আছেন যারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে ইচ্ছুক অফিসের ধরাবাঁধা সময়ের অভ্যন্তরে থাকতে চান না তারাই ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে আসতে চান। কিন্তু নতুন অবস্থায় ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা ইনকাম করা একটু কষ্টসাধ্য হয়ে থাকে।
একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন ব্যতীত কখনোই ফ্রিল্যান্সিং সেক্টর থেকে ইনকাম করা সম্ভব হয় না। সঠিক পরিকল্পনা এবং গাইডলাইন ব্যতীত ফ্রিল্যান্সিং থেকে ক্যারিয়ার নিশ্চিত করা অনেক কঠিন। তাই নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সঠিক গাইডলাইন এবং কাজে অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ হওয়ার পর নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সেরা মার্কেটপ্লেস কোনটি সে সম্পর্কে রিসার্চ করতে হয়। আমরা ইতিমধ্যে উপরের অংশে ১০ টি জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং সাইটের কথা উল্লেখ করেছি।
সেখানে বেশ কিছু ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস এর কথা বলা হয়েছে যেখানে তুলনামূলক প্রতিযোগিতা কম এবং কাজের সুযোগ বেশি রয়েছে। আপনি চাইলে আর্টিকেলের উপরের অংশগুলো পুনরায় পড়ার মাধ্যমে বিষয়গুলো সম্পর্কে অবগত হতে পারবেন। এখন আমরা নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার ক্ষেত্রে কি কি বিষয় নজরদারি করতে হয় সে সম্পর্কে জানার চেষ্টা করব।
- নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার মূল মন্ত্র হল নির্দিষ্ট নিশ সিলেক্ট করা। নিশ হল আপনি যে বিষয়ে কাজ করতে ইচ্ছুক সে বিষয়টি নির্ধারণ করা। ধরুন আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কাজ করতে চাচ্ছেন তাহলে সেটি হবে আপনার নিশ।
- নিশ সিলেক্ট করার পর আপনার এখন সেই বিষয়ে নিজেকে দক্ষ এবং যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। উদাহরণস্বরূপ আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কাজ করতে চান তাহলে সেই সেক্টরের আদলে যে ধরনের কাজ রয়েছে যেমন ফেসবুক মার্কেটিং, অ্যাড রানিং সহ যাবতীয় বিষয় সম্পর্কে দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
- আপনি যদি উপরের অংশ লক্ষ্য করেন তাহলে যে মার্কেটপ্লেস গুলোর কথা বলা হয়েছে। সেই মার্কেটপ্লেস গুলোতে আপনার আকর্ষণীয় প্রোফাইল তৈরি করতে হবে। আপনার প্রোফাইল অথবা পোর্টফোলিওই একমাত্র অবলম্বন যেখান থেকে বায়ার আপনার কাজের দক্ষতা সম্পর্কে অবগত হতে পারে।
- ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে সফলতা অর্জন করার আরো একটি মূল মন্ত্র হলো প্রফেশনাল মানের পোর্টফোলিও তৈরি করা। পোর্টফোলিও বলতে পূর্বের কোন কাজের অভিজ্ঞতা, নমুনা ইত্যাদি বুঝায়। যেমন ডিজাইন, লিখিত কনটেন্ট এগুলো পোর্টফোলিওর উদাহরণ।
- নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সেরা মার্কেটপ্লেস কোনটি এ বিষয়টিতে আমরা যে ধরনের মার্কেটপ্লেস গুলো উল্লেখ করেছি, অর্থাৎ কম প্রতিযোগিতা রয়েছে এধরনের মার্কেটপ্লেস গুলোতে সর্বপ্রথমে যোগদান করা।
- ফ্রিল্যান্সিং জগতে সফল হতে হলে আপনাকে সর্ব প্রথমেই বড় কোন প্রজেক্ট এর আশা করা যাবে না। ছোট ছোট কাজ দিয়ে শুরু করতে হবে যেখান থেকে আপনি অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেন। আর এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে পরবর্তীতে আপনি বড় প্রজেক্ট খুব সহজেই হ্যান্ডেল করতে পারবেন।
- ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সময় ও কাজের ব্যবস্থাপনা নির্ধারণ করা। ভাই আর আপনাকে প্রত্যেকটি কাজের অর্ডার দেওয়ার পরিপেক্ষিতে একটি নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিবে। অর্থাৎ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আপনাকে কাজটি জমা করতে হবে। তাই সময় জ্ঞান সম্পর্কে আপনাকে সচেতন হতে হবে।
- ক্লায়েন্টের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করাও ফ্রিল্যান্সিং এ সফল হওয়ার আরো একটি অন্যতম বিষয়। ক্লায়েন্টের সাথে যদি আপনি সঠিকভাবে কমিউনিকেশন করতে পারেন তাহলে দেখা যাবে পরবর্তীতে সে আপনার রিপিটেড ক্লায়েন্টে পরিণত হবে।
- যেহেতু ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে প্রতিযোগিতা অনেক বেশি। তাই সব সময় নিজেকে আপডেট রাখার পাশাপাশি যে সেক্টরে কাজ করছেন অবশ্যই সেই সেক্টরের খুঁটিনাটি বিষয়গুলো সব সময় জানার চেষ্টা করুন।
- নতুন প্রযুক্তি কি অথবা নতুন পদ্ধতি গুলো শেখার চেষ্টা করুন যা আপনার ভবিষ্যতে কাজে লাগবে। এজন্য আপনাকে নতুন সফটওয়্যার, টুলস এবং প্রোগ্রামিং ভাষার ওপর দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
ফ্রিল্যান্সারদের সংখ্যার দিক থেকে সবচেয়ে বড় মার্কেটপ্লেস কোনটি?
ফ্রিল্যান্সারদের সংখ্যার উপর নির্ভর করে বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বড় মার্কেটপ্লেস কোনটি এ বিষয়টিতে অনেক মতবাদ রয়েছে। অনেকে মনে করেন ফাইবার হল ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের সবচেয়ে বড় মার্কেটপ্লেস। অবশ্যই ফাইবার অনলাইন প্লাটফর্মটি সবচেয়ে বড় একটি মার্কেটপ্লেস হিসেবে উল্লেখিত রয়েছে। কিন্তু বর্তমান সময়ে আপ ওয়ার্ক মার্কেটপ্লেসটি ফ্রিল্যান্সারের দিক থেকে অনেকটাই এগিয়ে। যদি তালিকাভুক্ত ফ্রিল্যান্সার এর কথা বলা হয় সে ক্ষেত্রে অবশ্যই ফাইবারের চেয়ে “Up work” মার্কেটপ্লেসটি এগিয়ে থাকবে।
সারা বিশ্বে ফ্রিল্যান্সিং এ কত ডলারের বাজার রয়েছে এই প্রশ্নটিতে বর্তমান সময়ে বিশ্বব্যাপী প্রায় ১৫৭ কোটি ফ্রিল্যান্সার রয়েছে। ধারণা করা হয় ফ্রিল্যান্স প্লাটফর্মের বাজার বর্তমান সময়ে ৩.৩৯ বিলিয়ন ডলারের মত। তার মধ্যে হিসেব বলছে বর্তমানে upwork মার্কেটপ্লেসটি প্রায় ১২ মিলিয়ন এরো বেশি নিবন্ধিত ফ্রিল্যান্সার নিয়ে কাজ করছে। তাহলে ফ্রিল্যান্সার এর সংখ্যার উপরে নির্ভর করে যদি বলা হয় তাহলে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অনলাইন মার্কেটপ্লেস হবে আপ ওয়ার্ক (Up work)।
এখানে জব পোস্টিং ফিড অনেক দ্রুত আপডেট হয় এবং কাজগুলো অনেক প্রফেশনাল মানে হয়ে থাকে। এজন্যই বায়ার এবং সেলারের উভয় পক্ষেরই পছন্দের মার্কেটপ্লেস হয়ে উঠেছে এই আপ ওয়ার্ক।
ফ্রিল্যান্সিং-এর টাকা পাওয়ার বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম কোনটি?
নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সেরা মার্কেটপ্লেস কোনটি এ বিষয়টি জানার পাশাপাশি আরও একটি বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন হল ফ্রিল্যান্সিং এর টাকা পাওয়ার বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম কোনটি। ফ্রিল্যান্সিং এর টাকা পাওয়ার জন্য বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে পেওনিয়ার (Payoneer)। এটি একটি অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেম যা ফ্রিলান্সারদের জন্য খুবই সুবিধাজনক। পেওনিয়ার এর মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই দেশের বাইরে থেকে টাকা আনতে পারবেন।
পরবর্তীতে সেই টাকা লোকাল ব্যাংক একাউন্টে ট্রান্সফার ও করতে পারবেন এতে কোনরকম ঝামেলা পোহাতে হবে না। বর্তমান সময়ে পেওনিয়ার এর সবথেকে বড় সুবিধা হল আপনি এখান থেকে সরাসরি মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে অর্থাৎ বিকাশ, নগদ, রকেটের মতো সার্ভিসের মাধ্যমে খুব সহজে টাকা ট্রান্সফার করতে পারছেন। আবার পেওনিয়ার কর্তৃপক্ষ পূর্বের থেকে বর্তমান সময়ে তাদের সার্ভিস চার্জ কম করেছে যা ফ্রিল্যান্সারদের জন্য এটাও একটি সুবিধা। যেহেতু বাংলাদেশে পেপাল চালু নেই এ কারণে পেওনিয়ার এর উপর ভরসা করেই সকল ফ্রিল্যান্সার গুলো তাদের কার্যক্রম পরিচালিত করছে।
লেখকের মন্তব্য
ফ্রিল্যান্সিং একটি মুক্ত পেশা তা আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে সেটি পরিলক্ষিত করতে পেরেছি। সুতরাং আপনি যদি একজন স্বাধীনচেতা মানুষ হয়ে থাকেন এবং বেকার সময় পার করছেন তাহলে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টর টি আপনার জন্য হতে পারে ভাগ্য পরিবর্তনের জায়গা। যদিও ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে সফলতা পেতে হলে অবশ্যই আপনাকে ধৈর্য, সময় এবং অর্থ এ তিনটি বিষয়ই বিনিয়োগ করতে হবে। আপনার ফ্রিল্যান্সিং যাত্রাটি আরও এক ধাপ এগিয়ে নিতেই আজকে আমরা ফ্রিল্যান্সিং এর মার্কেটপ্লেস সম্বন্ধে আপনাদেরকে সকল ধারণা এবং তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি।
আমরা এখানে নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সেরা মার্কেটপ্লেস কোনটি এই প্রশ্নটিতে যে ধরনের Underrated মার্কেটপ্লেস এর কথা উল্লেখ করেছি সেখান থেকে আপনাদের যাত্রা শুরু করা উচিত। এর কারণ হলো আপনি যদি প্রথমেই বড় মার্কেটপ্লেস গুলোতে ট্রাই করতে গেলে যদি কাজ না পান সেক্ষেত্রে হতাশ হয়ে যাবেন। এজন্যই আমরা নতুনদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার ক্ষেত্রে এ ধরনের কম প্রতিযোগিতা মূলক ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলো সাজেস্ট করে থাকি। আশা করি আমাদের এই আইডিয়া এবং তথ্যগুলো আপনাদের অনেকটাই কাজে আসবে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url