অনলাইন ইনকাম পদ্ধতি এবং অনলাইনে ইনকাম করার উপায় গুলো জানুন
অনলাইন ইনকাম পদ্ধতি সম্পর্কে আমরা অবশ্যই কোন না কোন এক সময় জানার চেষ্টা করেছি। এর কারণ হলো আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় যখন বিভিন্ন রকম নিউজ দেখে থাকি যে অনেকে আজকাল অনলাইন থেকে অনেক টাকা ইনকাম করছে। এ ধরনের খবর দেখার পরে আমাদের মাথার মধ্যেও অনলাইন থেকে ইনকাম করার বিষয়গুলো অটোমেটিক ভাবে চলে আসে। যারা টেক বিষয়ের জিনিসগুলো নিয়ে বেশি আগ্রহ প্রকাশ করে থাকেন তাদের ক্ষেত্রে অনলাইন ইনকাম করার বিষয়টি অনেক বেশি পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। কিন্তু আগ্রহ থাকলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় সঠিক গাইডলাইন এবং পদ্ধতি গুলো না জানার ফলে অনলাইন থেকে ইনকাম করা আর হয়ে ওঠে না।
আপনি যদি গাইডলাইন ব্যতীত অনলাইন থেকে ইনকাম করার চিন্তা করে থাকেন তাহলে অবশ্যই সেখানে বিফল হয়ে যাবেন। তাই আজকে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আপনাদেরকে অনলাইন ইনকাম পদ্ধতি সম্পর্কে সকল কিছু জানানোর চেষ্টা করব। পাশাপাশি অনলাইনে ইনকাম করার উপায় এবং অনলাইন ইনকাম সাইট বিকাশ পেমেন্ট এ বিষয়টি সম্পর্কেও তথ্য ইনক্লুড করা হবে। সুতরাং অনলাইন ইনকাম পদ্ধতি এবং কিভাবে, কোন বিষয়গুলো জানার মাধ্যমে অনলাইন থেকে ইনকাম করা যাবে সে সকল বিষয়ে জানার জন্য অবশ্যই আপনাদেরকে আর্টিকেলের প্রত্যেকটি অংশ মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।
পোস্ট সূচিপত্র
অনলাইনে ইনকাম করার উপায়
বর্তমান সময়ে অনলাইন থেকে ইনকাম করার বিষয়টি সামনে আসলেই আমরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মনে করে থাকি শুধুমাত্র ফ্রিল্যান্সিং করে হয়তোবা অনলাইনে ইনকাম করা সম্ভব। বিষয়টি আসলে তেমন নয়, আপনি ফ্রিল্যান্সিং ব্যতীত আরো অনেক কাজ রয়েছে যেগুলো করার মাধ্যমেও অনলাইন থেকে ইনকাম করতে পারবেন। যেমন ধরুন আপনি যদি আপনার ব্যবসা অনলাইন ভিত্তিক করতে চান সে ক্ষেত্রে ফেসবুকে এড ক্যাম্পেইন পরিচালনা করেও সেল আনতে পারবেন। তাহলে এটিও একটি অনলাইন থেকে ইনকাম করার উপায়।
অনেকে আছে অনলাইনে টিউশনি করিও আজকাল ইনকাম করছে। তাই শুধুমাত্র ফ্রিল্যান্সিং এর পেছনে না ছুটে অনলাইনে ইনকাম করার উপায় আরও যেগুলো রয়েছে সে সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে। ফেসবুকে ভিডিও আপলোড করে যারা টাকা ইনকাম করে সেটিও কিন্তু ভালো একটি উপায়। অনেকেই দেখবেন অনেক গরিব ঘর থেকে উঠে এসে শুধুমাত্র ইউটিউব প্লাটফর্ম থেকে কাজে লাগিয়ে তারা আজকে কোটিপতি বনে গেছে। ইউটিউব এমন একটি অনলাইন প্লাটফর্ম যদি আপনি একবার সাকসেসফুল হতে পারেন তাহলে আপনাকে আর পেছনে তাকাতে হবে না।
যে পদ্ধতি বা উপায় অবলম্বন করুন না কেন আপনাকে সর্ব প্রথমে সে বিষয়টিতে জ্ঞান অর্জন করতে হবে অর্থাৎ স্কিল ডেভেলপমেন্ট করতে হবে। বিনা স্কিলে আপনি অনলাইন থেকে কখনোই ভালো কিছু করতে পারবেন না। নিচে কিছু উপায় বা অনলাইন ইনকাম পদ্ধতি তুলে ধরা হলো এগুলো থেকে যেকোনো একটি স্কিল যদি ডেভলপমেন্ট করতে পারেন তাহলে অবশ্যই আপনি সাকসেসফুল হতে পারবেন।
- ফ্রিল্যান্সিং
- ওয়েবসাইট বিক্রি
- আর্টিকেল রাইটিং
- ভিডিও ক্রিয়েটিং
- ভিডিও এডিটিং
- ভিডিও দেখে ইনকাম
- ড্রপ শিপিং করে ইনকাম
- ভয়েস ওভার আর্টিস্ট
- গুগল এডসেন্স
- ওয়েবসাইটে ছবি বিক্রি
- ই-বুক বিক্রি
- অনলাইন কোর্স বিক্রি
- সার্ভে করে ইনকাম
- সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
- অনলাইন টিউশনি
- গেম খেলে ইনকাম
- ক্যাপচা সল্ভ
- মাইক্রো জব সাইট
- অ্যাপস থেকে ইনকাম
উপরে বর্ণনাকৃত এ ধরনের বিষয়গুলি মূলত অনলাইনে ইনকাম করার উপায় হিসেবে বিবেচিত। এখান থেকে যেকোনো একটি কাজ বেছে নিয়ে যদি আপনি সে সম্পর্কে স্কিল ডেভলপমেন্ট করতে পারেন তাহলে একটি সময় অবশ্যই সফলতার মুখ দেখতে পারবেন। তবে আপনাকে নিয়মিত কাজ করে যেতে হবে। প্রথম অবস্থায় সফলতা না পেলেও একটি সময় ধরে যদি লেগে থাকেন তাহলে কিছু একটা হবেই। বিষয়টি এমন নয় যে আজকে থেকে কাজ শুরু করলেন কালকে থেকে আপনার ইনকাম শুরু হয়ে যাবে।
ইনকাম পর্যন্ত যাওয়ার জন্য আপনাকে কমপক্ষে ১ টি বছর সময় নিয়ে আসতে হবে। আর এজন্যই অনলাইন ইনকাম পদ্ধতি অনুসরণ করলেও শুধুমাত্র ধৈর্যধারণ এর অভাবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ব্যক্তিরা ঝরে পড়ে। তাই আপনাকে ধৈর্য, অর্থ, পরিশ্রম, সময় সবকিছুই বিনিয়োগ করতে হবে।
অনলাইন ইনকাম পদ্ধতি
আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে ইনকাম, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে ইনকাম এ সকল বিষয়ে ইতিমধ্যে বিভিন্ন ধরনের আর্টিকেল পাবলিশ করেছি। আপনি চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করে সে সম্পর্কে আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো পেতে পারেন। তবে আজকের এই আর্টিকেলে আমরা উপরে ইতিমধ্যে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টর ব্যতীত আরো কিছু বিষয় ইনক্লুড করেছি যেগুলোর মাধ্যমে আপনি অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। সুতরাং আজকে এক্সট্রা যে বিষয়গুলো জানানো হয়েছে সেগুলোই আপনাদেরকে বিস্তারিতভাবে জানানো হবে।
ওয়েবসাইট বিক্রি করে ইনকাম
অনেকেই আছেন শুধুমাত্র অনলাইনে ওয়েবসাইট সেল করে প্রতি মাসে লক্ষ টাকা ইনকাম করে থাকেন। আপনি যদি অনলাইনে কম টাকা ইনভেস্ট করে অধিক টাকা ইনকাম করতে চান তাহলে ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন। আপনার কাছ থেকে যারা ব্লগ ওয়েবসাইট কিনে নিবে তারা পরবর্তীতে আর্টিকেল পাবলিশ করে গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে টাকা ইনকাম করতে পারবে। এ ধরনের কাজ করার জন্য আপনাকে প্রথমে জানতে হবে যে কিভাবে ব্লগ ওয়েবসাইট ক্রিয়েট করতে হয়। এরপর ডোমেইন এবং হোস্টিং বিষয়ক আপনাকে জানতে হবে।
ডোমেইন এবং হোস্টিং ক্রয় করে ক্রিয়েটকৃত ওয়েবসাইটের সাথে যুক্ত করে তৈরি করে ফেলতে পারবেন ব্লগ ওয়েবসাইট। তারপর আপনি সেটাকে ফ্রি থিম অথবা পেইড থিম দিয়ে মনের মত করে ডিজাইন করে নিতে পারবেন।তাই সেই ওয়েবসাইটে কিছু আর্টিকেল পাবলিশ করার পর google এডসেন্স এপ্রুভ পেয়ে গেলে সেখান থেকে প্রতিনিয়ত টাকা ইনকাম করা শুরু হয়ে যাবে। তাই আপনি চাইলে ব্লগ ওয়েবসাইট বিক্রি করেও টাকা ইনকাম করতে পারবেন। যেহেতু সকলে ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেনা তাই আপনি এ ধরনের অনলাইন ইনকাম পদ্ধতি গুলো এপ্লাই করতে পারেন।
ভিডিও দেখে ইনকাম
আজকাল সোশ্যাল মিডিয়া এবং ইউটিউব প্লাটফর্মে বিভিন্ন রকম মুখরোচক ভিডিও দেখে থাকবেন যেখানে উল্লেখ থাকে যে লক্ষ টাকা ইনকাম করতে পারবেন শুধুমাত্র ভিডিও দেখে এরকম বিষয়গুলো। তবে আসলেই কি ভিডিও দেখে ইনকাম করা সম্ভব কিনা তা আমাদের জানতে হবে। হ্যাঁ পাঠক ভিডিও দেখে আসলেই টাকা ইনকাম করা সম্ভব। কিন্তু বাস্তব জীবনে যে টাকা আপনি ভিডিও দেখে ইনকাম করবেন তা অতি সামান্য। যদি আপনার কোন রকম স্কিল না থাকে সে ক্ষেত্রে এ ধরনের কাজ বেছে নিতে পারেন।
কিছু প্ল্যাটফর্ম রয়েছে যারা ভিডিও দেখার পরিবর্তে অল্প পরিমাণ অর্থ প্রদান করে থাকে। আমাদের পরামর্শ থাকবে আপনি যদি অনলাইন থেকে ইনকাম করতে চান তাহলে অবশ্যই একটি স্ক্রিল ডেভেলপমেন্ট করুন। ভিডিও দেখে ইনকাম করতে গেলে আপনার শুধু শুধু সময় নষ্ট হবে তার পরিবর্তে হয়তো অল্প কিছু টাকা পেলেও পেতে পারেন। সুতরাং এ ধরনের প্লাটফর্ম গুলোতে সময় ইনভেস্ট না করাই ভালো। তারপরও আপনাদের জ্ঞাতার্থে ভিডিও দেখে কিভাবে ইনকাম করবেন সে বিষয়গুলো জানানোর চেষ্টা করব।
ভিডিও দেখে টাকা ইনকাম করার ক্ষেত্রে কিছু অ্যাপস এর প্রয়োজন হবে। মূলত এ ধরনের কাজ অ্যাপস এর মাধ্যমে হয়ে থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অ্যাপসগুলো ইসকাম করে চলে যায় টাকা পেমেন্ট করে না। সারাদিন ভিডিও দেখে হয়তো ১০ টাকা আয় করা যেতে পারে। অনেক সময় সেই টাকাও আর উইথড্র করা সম্ভব হয় না। আপনাদেরকে কিছু সাইটের নাম বলছি যেগুলোতে আপনি ছোট ছোট মাইক্রো জব করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। সেখানেও কিছু কিছু সাইটে ভিডিও দেখে টাকা ইনকাম করার সুযোগ আছে কিন্তু সেখানে মূল্য অনেক কম দেওয়া থাকে।
আপনি চাইলে প্রাথমিক অবস্থায় কোন স্কিল ডেভেলপমেন্ট করার পূর্বে অনলাইনে ইনকাম করার উপায় হিসেবে সাইটগুলোকে ফলো করতে পারেন। নিচে সাইটগুলোর নাম তুলে ধরা হলো।
- Zerk
- Inboxdollar
- Truelancer
- Clickworkers
- Task rabbit
- Microworkers
ভিডিও এডিটিং করে ইনকাম
ভিডিও এডিটিং এর ডিমান্ড বর্তমান সময়ে কতটা বেড়েছে তা সোশ্যাল মিডিয়া এবং youtube এর মত প্লাটফর্ম গুলোর দিকে তাকালে বুঝতে পারবেন। অনেক বড় মানের যে সকল কনটেন্ট ক্রিকেটার রয়েছেন তারা তাদের ভিডিও এডিটিং কাজের জন্য একজন এডিটর হায়ার। তাই আপনি যদি ভিডিও এডিটিং এক্সপার্ট হতে পারেন তাহলে যেকোনো একজন কন্টেন্ট ক্রিয়েটরের আন্ডারে কাজ করে ইনকাম করতে পারবেন। তারা আপনাকে ভিডিও শুট করে পাঠিয়ে দেবে আপনি এডিটিং করে তার কাছে জমা দিবেন।
যেহেতু ভিডিও এডিটিং একটি ক্রিয়েটিভিটির বিষয় তাই আপনাকে ভালোভাবে কাজগুলো করার চেষ্টা করতে হবে। যদি আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ পারেন তাহলে সে ক্ষেত্রে মোশন গ্রাফিক্স এর কাজ করেও টাকা ইনকাম করতে পারবেন। তবে ভিডিও এডিটিং পারফেক্টলি করার জন্য অবশ্যই একটি ভাল মানের কম্পিউটার অথবা ল্যাপটপের প্রয়োজন হবে। ল্যাপটপ এবং কম্পিউটার থাকার পাশাপাশি অবশ্যই সেখানে এডিটিং করার Adobe premiere Pro এ ধরনের ভালো মানের সফটওয়্যার ইন্সটল থাকতে হবে।
এ ধরনের সফটওয়্যার এর ফিচারগুলো ক্রয় করে নিতে হয়। তা এখানে আপনাকে টাকা ইনভেস্ট করার প্রয়োজন হতে পারে। সুতরাং অনলাইন ইনকাম পদ্ধতি গুলোতে অবশ্যই আপনি ভিডিও এডিটিং কাজ আজ থেকে শুরু করতে পারেন।
ভয়েস ওভার করে ইনকাম
ভিডিও এডিটিং এর পাশাপাশি আরও একটি চাহিদা সম্পন্ন কাজ হল ভয়েস অভার। ভিডিও এডিটিং যতই ভালো করা হোক না কেন সেখানে যদি ভয়েস ওভার ভালো না হয় সেক্ষেত্রে ওই ভিডিওটির আর কোন মূল্য থাকে না। আপনি ইউটিউবে একটি স্বনামধন্য চ্যানেল যার নাম হলো “মায়াজাল” এই চ্যানেলটিতে লক্ষ্য করলে দেখবেন এখানে এডিটিং এর পাশাপাশি রয়েছে সুন্দর ভয়েস ওভার। তার চ্যানেলের গ্রো হওয়ার মূল কারণ হলো সুন্দরভাবে উপস্থাপন এবং ভয়েস। আপনি যদি একজন ভয়েস ওভার আর্টিস্ট হতে পারেন।
তাহলে ফ্রিল্যান্সিং এর পাশাপাশি কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের ভিডিওগুলোতে অনলাইনে ইনকাম করার উপায় হিসেবে ভয়েস দিয়েও মাসে অনেক টাকা ইনকাম করতে পারবেন। অনেক ভয়েস অভার আর্টিস্ট রয়েছেন যারা প্রতি মিনিট এর জন্য ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা চার্জ করে থাকেন। সুতরাং আপনার ভয়েস যদি ভাল হয় এবং আপনি ভালোমতো উপস্থাপন করতে পারেন তাহলে এ ধরনের কাজ করতে পারেন। যদি মনে করেন আপনি নিজে ইউটিউব চ্যানেল খুলে বিভিন্ন রকম ভিডিও এডিট করার পাশাপাশি যদি ভয়েস ওভার যোগ করতে পারেন।
তাহলে গুগল এডসেন্সের মাধ্যমেও টাকা ইনকাম করা সম্ভব। সুন্দর ভয়েস ওভার দেওয়ার জন্য অবশ্যই ভালো মানের মাইক্রোফোন থাকা জরুরি। পাশাপাশি ভয়েস রেকর্ডিং করার সময় নয়েজ মুক্ত রুমে রেকর্ডিং কার্য সম্পাদন করতে হবে। স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী ভয়েস রেকর্ড করার চেষ্টা করুন এতে রেকর্ডিং গোছালোভাবে তৈরি হবে।
ড্রপ শিপিং করে ইনকাম
আপনি যদি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটিভ হয়ে থাকেন তাহলে বিডি শপ নামে একটি প্লাটফর্ম রয়েছে তা অবশ্যই জেনে থাকবেন। এই প্লাটফর্মটি মূলত ড্রপ সিপারদের নিয়ে কাজ করে থাকে। তারা তাদের প্রোডাক্টগুলো বিভিন্ন ছেলেমেয়েদের মাধ্যমে সেল করে এবং তাদেরকে একটি কমিশন প্রদান করে থাকে। অর্থাৎ তারা প্রথমে একটি প্রোডাক্ট দেশের বাড়ি থেকে ইমপোর্ট করে। তারপর তাদের কোম্পানির আওতায় যেসকল ছেলে মেয়ে রেজিস্টার্ড প্রাপ্ত হয়েছে। তারা যখন প্রোডাক্টগুলো বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া বা পন্থা অবলম্বন করে বিক্রি করে।
সেখান থেকে তাদেরকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশন প্রদান করা হয়ে থাকে। ড্রপ শিপিং করার ক্ষেত্রে এখানে সবচেয়ে মজার বিষয় হলো আপনাকে কোনরকম প্রোডাক্টে ইনভেস্ট করতে হবে না। আপনার কাজ হবে প্রোডাক্টগুলো সেল করা এবং সেই অনুযায়ী আপনার একাউন্টে কমিশন যুক্ত হবে। ড্রপ শিপিং ব্যবসা অনেকটা এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মত হয়ে থাকে। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ যেমন প্রোডাক্ট সেল করার পরিবর্তে কমিশন দেওয়া হয়ে থাকে এখানেও ঠিক একইভাবে কমিশন প্রদান করা হয়।
আর বর্তমানে ড্রপ শিপিং অনলাইন ইনকাম পদ্ধতি গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ভাই আপনি যদি অনলাইনে ইনকাম করার উপায় খুঁজে দেখেন তাহলে আজকে থেকে শুরু করতে পারেন ড্রপ শিপিং ব্যবসা।
ওয়েবসাইটে ছবি বিক্রি
আমরা অনেকেই আছি যারা শখের বশে ছবি তুলে থাকি। কিন্তু আপনার এই শখের কাজটিকে কাজে লাগিয়ে আপনি অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করতে পারেন। আপনি বিষয়টি জেনে খুশি হবেন যে অনলাইনে কিছু ওয়েবসাইট রয়েছে যারা আপনার ক্যাপচারকৃত ছবিগুলো কিনে থাকে। আপনি যখন Pinterest এর মত ওয়েবসাইট গুলোতে ছবি ডাউনলোড করতে যান তখন সেখানে ওয়াটার মার্ক থাকে। এই কোম্পানিগুলো সাধারণত ছবি কিনে এ ধরনের ওয়েবসাইটে বিক্রির জন্য দিয়ে থাকে। তাই আপনার তোলা ছবিগুলো যদি ভালো মানের এবং গ্রাহকের কাছে চাহিদা সম্পন্ন হয়।
তাহলে আপনি ওই ধরনের ওয়েবসাইটে ছবিগুলো বিক্রি করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। এজন্য আপনাকে ওয়েবসাইটগুলোর নাম জানতে হবে পাশাপাশি সেখানে অ্যাকাউন্ট ক্রিয়েট করে নিবন্ধন করতে হবে। অবশ্যই আপনার বয়স ১৮ বছর বেশি হতে হবে। অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়ে গেলে আপনি স্যাম্পল হিসেবে কিছু ছবি তাদেরকে পাঠাতে পারেন। অর্থাৎ যে ওয়েবসাইটে আপনি একাউন্ট ক্রিয়েট করবেন সেখানে ডেমো হিসেবে কয়েকটি ছবি রিভিউয়ের জন্য পাঠাতে হবে। রিভিউ হয়ে গেলে যদি আপনি তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে থাকেন।
তাহলে আপনার একাউন্টটি তৈরি সম্পন্ন হবে। ছবির কপিরাইট আপনার থাকবে এবং সেখান থেকে আপনি টাকা ইনকাম করতে পারবেন। নিচে কিছু ওয়েবসাইটের নাম দেওয়া হলো যেখান থেকে ছবি বিক্রি করে টাকা ইনকাম করা সম্ভব।
- Shutterstock
- Adobe Stock
- 500 PX
- DreamsTime
- Etsy
- Getty Images
অনলাইনে টিউশনি করিয়ে ইনকাম
করোনা মহামারী কালীন সময়ে আমরা ইতিহাস হতে দেখেছি। সেখানে বাচ্চারা স্কুলে যাওয়ার পরিবর্তে ঘরে বসেই অনলাইনে ক্লাস করেছে। আর আপনি যদি এই অনলাইন ইনকাম পদ্ধতিটি কাজে লাগাতে পারেন তাহলে ঘরে বসেই টিউশনি করেও টাকা ইনকাম করা সম্ভব। আপনি যদি একজন শিক্ষিত ব্যক্তি হয়ে থাকেন এবং আপনার কাছে ডিগ্রি থাকে তাহলে নির্দিষ্ট কিছু সাবজেক্ট পড়ানোর মাধ্যমে টিউশানি করা সম্ভব। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ছাত্ররা টিউশনি করে থাকে তাই অনলাইনে টিউশনি করিয়ে ইনকাম করার বিষয়টি ছাত্রদের মাঝে সবচেয়ে বেশি কার্যকর হবে বলে আমরা মনে করি।
যদিও পূর্বে টিউশনি খোঁজার জন্য দেয়ালে দেওয়ালে পোস্টার লাগাতে হতো। কিন্তু আপনি চাইলে অনলাইনে টিউশনি খুঁজতে পারবেন এমনকি ক্লাস করাতে পারবেন। অনেকে আছে শুধুমাত্র ক্যামেরা দিয়ে বিভিন্ন কাজ সম্পর্কিত ভিডিও ক্রিয়েট করে সেটি বিক্রি করে থাকে। অনেকটা অনলাইনে কোর্স বিক্রি করার মত। টেন মিনিট স্কুল যেমন একটি কোর্স লঞ্চ করেছিল সেটি হল ফেসবুক মার্কেটিং কোর্স। এখানে তারা নির্দিষ্ট কিছু ভিডিও তৈরি করে একটি ওয়েবসাইটে পাবলিশ করেছে এবং গ্রাহকদের এক্সেস প্রদান করেছে।
তারা একবার ভিডিও নির্মাণ করে বারবার কাস্টমারদের কাছে বিক্রি করতে পারছে। ঠিক একইভাবে আপনি যদি অনলাইনে বিভিন্ন সাবজেক্ট এর রিলেটেড সলিউশন ভিডিও তৈরি করে সেটি বিক্রি করতে পারেন। আবার ইউটিউবে যা চ্যানেল খুলে ও এ ধরনের ভিডিও পাবলিশ করেও গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে টাকা ইনকাম করা সম্ভব। আবার সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে যদি আপনি আপনার স্টুডেন্ট খুঁজে পান তাহলে Google Meet, Zoom meeting, Skype এ ধরনের প্লাটফর্মে তাদের অনলাইনে ক্লাস করিও টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
তাহলে বুঝতে পারছেন যে অনলাইন ইনকাম পদ্ধতি কত ভাবে রয়েছে শুধু দরকার একটু চেষ্টা। আপনি যদি চেষ্টা করেন তাহলে অবশ্যই অনলাইনে ইনকাম করার উপায় গুলো সহজে খুঁজে পেতে পারেন।
সার্ভে করে ইনকাম
কোনরকম কাজের দক্ষতা ছাড়া যদি আপনি অনলাইন থেকে ইনকাম করার কথা চিন্তা করে থাকেন তাহলে সার্ভে করে ইনকাম হতে পারে আপনার জন্য একটি ভালো উপায়। অনেকের সার্ভে বিষয়টি কি সে সম্পর্কে অবগত নয়। সার্ভে হলো একটি ইংরেজি কথা এর অর্থ হল জরিপ। বিশ্বের অনেক নামিদামি কোম্পানী রয়েছে যারা তাদের পণ্যের কাস্টমার যাচাই-বাছাই করার জন্য একটি জরিপ করে থাকে। বিষয়টি অনেকটা লিড জেনারেশন এর মত কাজ করে। লিড জেনারেশনে যেমন বিভিন্ন কাস্টমারের ডিটেইলস খুঁজতে হয়।
ঠিক তেমনি এখানে পুণ্য অথবা সার্ভিস ভেদে আপনাকে জরিপ করতে হবে। কোম্পানিগুলো আলাদাভাবে কোন কর্মী নিয়োগ না দিয়ে জরিপ কোম্পানিগুলোর কাছে চুক্তিবদ্ধ হয়ে যায়। আর জরিপ কোম্পানিগুলো এ ধরনের ব্যক্তিদের খোঁজে যারা ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করতে ইচ্ছুক। সুতরাং আপনি যদি সার্ভে করে ইনকাম করতে চান সে ক্ষেত্রে সেই সকল কোম্পানিতে প্রথমে নিবন্ধন কার্য সম্পন্ন করতে হবে। জরিপগুলো একদম সহজ হয় যেখানে আপনাকে সহজ কিছু প্রশ্ন করা হয়ে থাকে। একটা জরিপ সম্পন্ন দেশ সময় লাগে ১০ থেকে ১২ মিনিট।
জরিপ ভেবে আপনি ১ থেকে ৫ ডলার পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন। বাংলাদেশে এ ধরনের জরিপ কোম্পানির নেই যারা অনলাইনের মাধ্যমে জরিপ করে থাকে। সাধারণত বাইরের দেশের কোম্পানির কাজ আপনাকে করতে হবে। সার্ভে কাজ করার জন্য আপনাকে আপনার লোকেশন এবং আইপি অ্যাড্রেস চেঞ্জ করে কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে বিভিন্ন দেশের আইপি এড্রেস ক্রয় করে ব্রাউজারে সেটআপ করে নিতে হয়। সার্ভে করে ইনকাম করার জনপ্রিয় ওয়েবসাইটগুলোর নিচে দেওয়া হল।
- Survey Junkie
- Inbox Dollars
- Swagbuck
- Life Points
- YouGov
শেষের কথা
অনলাইন থেকে ইনকাম করার বিষয়টি সম্পর্কে আমাদের সকলের আগ্রহ থাকলেও ধৈর্যের অভাবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমরা সফল হতে পারি না। আমরা আজকে আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনাদেরকে শুধুমাত্র অনলাইন ইনকাম পদ্ধতি এবং অনলাইনে ইনকাম করার উপায় গুলো জানানোর চেষ্টা করেছি। আমরা যে গাইডলাইনগুলো প্রোভাইড করেছি সেগুলো ফলো করার মাধ্যমে অবশ্যই আপনারা একদিন সফল হতে পারবেন। কিন্তু কিছুদিন কাজ করার পরে যদি মন মানসিকতা হারিয়ে ফেলেন সেক্ষেত্রে আমাদের আর্টিকেলের যতই ভালো মানের কনটেন্ট দেওয়া হোক না কেন সেটি আর কার্যকর হবে না।
তাই আর্টিকেলের প্রত্যেকটি বিষয় মনোযোগ সহকারে পড়ার পাশাপাশি আপনাদেরকে সে অনুযায়ী কাজ করে যেতে হবে। আমরা সবসময় চেষ্টা করি আপনাদেরকে নতুন কিছু দেওয়ার জন্য, যার পরিপ্রেক্ষিতে আপনারা আপনাদের গুরুত্বপূর্ণ সময়টিকে কাজে লাগাতে পারেন। এরকম আরো তথ্য সমৃদ্ধ ফ্রিল্যান্সিং টিপস এবং অনলাইন ইনকাম রিলেটেড বিভিন্ন আর্টিকেল আমাদের ওয়েবসাইটে ইতিমধ্যে পাবলিশ করা আছে। আপনি চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করে এ ধরনের তথ্য খুব সহজেই পেতে পারেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url