সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি?-সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে আয়
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে আয় করার বিষয়টি আমরা বিভিন্ন নিউজফিডে দেখে থাকি। সেই অনুযায়ী বিভিন্ন মাধ্যম থেকে তথ্য কালেকশন করার চেষ্টা করি যে কিভাবে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার মাধ্যমে আয় করা যায়। আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই ডিজিটাল মার্কেটিং এর নাম অবশ্যই শুনে থাকবেন। বর্তমান সময়ে সকলেই ফ্রিল্যান্সার হতে চাই এবং সকলেই ডিজিটাল মার্কেটার হতে চায়।
অনেকে আবার ডিজিটাল মার্কেটিং এবং সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কে আলাদাভাবে দেখে। কিন্তু তারা জানে না যে ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি অংশ হল সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং। তাই নিউজে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে আয় করছে লক্ষ টাকা এ ধরনের খবর দেখার পর যদি আপনার এই সেক্টরে আসার ইচ্ছা জাগে। তাহলে অবশ্যই সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি এবং এর আদ্যপ্রান্ত সম্পর্কে জানতে হবে তারপরেই কেবল এই সেক্টরে আসা উচিত। তাই আজকে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা উক্ত বিষয়টি আপনাদেরকে বিস্তারিতভাবে জানানোর চেষ্টা করব।
পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর কাজ কি এবং সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার উপায় সম্পর্কে সকল ধরনের টিপস আপনাদের মাঝে শেয়ার করা হবে। সুতরাং সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে আয় করতে চাইলে অবশ্যই আজকে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।
পোস্ট সূচিপত্র
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং হল এমন একটি সিস্টেম যেখানে আমাদের ব্যবহারকৃত সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম গুলোকে টার্গেট করে মার্কেটিং ব্যবস্থাপনা পরিচালনা করা হয়ে থাকে। ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি অন্যতম অংশ হলো সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং। যারা ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে কাজ করে তারা কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম গুলো ব্যবহার করে শুধুমাত্র তাদের ক্লায়েন্টের পণ্য সেল অথবা সার্ভিসের বিজ্ঞাপন প্রচারণা করার জন্য। উদাহরণস্বরূপ আপনি যখন ফেসবুক অথবা ইনস্টাগ্রামে স্ক্রোলিং করেন তখন আপনার সামনে অটোমেটিক ভাবে কিছু পণ্যের বিজ্ঞাপন সাজেস্ট করা হয়ে থাকে।
অনেক সময় পণ্যের পাশাপাশি বিভিন্ন সার্ভিস সম্পর্কে আপনাকে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। এগুলোই সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর বড় উদাহরণ। আপনার প্রকৃতপক্ষে মনে হতে পারে যে এগুলো হয়তো বা ফেসবুক থেকে অটোমেটিক আপনার সামনে প্রদর্শন করা হচ্ছে। কিন্তু এর পেছনে একজন ডিজিটাল মার্কেটার রয়েছে যে কিনা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার জন্য এ প্লাটফর্মটি ব্যবহার করে আপনার সামনে কিছু বিজ্ঞাপন প্রদর্শিত করছে। যদিও ১০০% সিওর হয়ে তারা অডিয়েন্সের সামনে বিজ্ঞাপন গুলো প্রচার করতে পারে না।
কিছু ট্রিক্স ফলো করে পণ্যের অথবা সার্ভিসের সঠিক অডিয়েন্সের কাছে বিজ্ঞাপন গুলো প্রচারণা করার চেষ্টা করা হয়। আর এই পুরো প্রক্রিয়াটাই হল সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সাধারণত ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, লিংক ডিন টিক টক এ ধরনের প্লাটফর্মে পরিচালনা করা হয়ে থাকে। যেহেতু এ সকল প্লাটফর্মে অধিক কাস্টমার বা অডিয়েন্স পাওয়া যায় তাই সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে আয় করার বিষয়টি অনেক সহজ হিসেবে ধরা হয়।
কিন্তু আপনি যদি একজন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেট আর হতে চান তাহলে অবশ্যই সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি এবং সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার উপায় সম্পর্কে সঠিক তথ্য আহরণ করতে হবে। সর্বপ্রথমে আপনাকে জানতে হবে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার প্ল্যাটফর্ম গুলো সম্পর্কে। নিচে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার জন্য সকল ধরনের প্লাটফর্ম গুলো দেওয়া হলো।
- ফেসবুক (Facebook)
- ইনসট্রাগ্রাম Instagram
- লিংক ডিন (Linkedin)
- টুইটার (Twitter)
- টিকটক (TikTok)
- স্ন্যাপ চ্যাট (Snapchat)
- ইউটিউব (YouTube)
- টেলিগ্রাম (Telegram)
- হোয়াটসঅ্যাপ (Whatsapp)
- ফ্লিকার (Flicker)
ফেসবুক মার্কেটিং করার জন্য উপরে বর্ণনাকৃত এ সকল প্লাটফর্মে টার্গেটকৃত অডিয়েন্স খুঁজে পাওয়া যায়। অর্গানিক পদ্ধতিতে ফেসবুক মার্কেটিং করার পাশাপাশি এ সকল প্লাটফর্মে এড ক্যাম্পেইন পরিচালনা করেও পণ্যের বিজ্ঞাপন নিশ্চিত করা হয়ে থাকে। আমরা ফেসবুকে ঘোরাঘুরি করার দেখে থাকি যে আমাদের হোমপেজে “Sponsored” নামক কিছু পোস্ট সাজেশন করা হয়ে থাকে। পোস্টগুলো সাধারণত কোন পণ্য অথবা সার্ভিসের বিজ্ঞাপন হয়। এগুলোই সাধারণত একজন ডিজিটাল মার্কেট আর সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম টি ব্যবহার করে আপনার সামনে পণ্যের বিজ্ঞাপন গুলো নিয়ে আসে। আশা করি আপনারা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি এই বিষয়টি খুব ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে আয়
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে আয় করতে হলে সর্বপ্রথমে আপনাকে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং স্ট্রাটেজি সম্পর্কে জানতে হবে। কিভাবে এবং কোন পদ্ধতি গুলো অবলম্বন করে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করা যায় সেগুলো যদি না জানেন তাহলে সেখান থেকে কখনোই আয় করতে পারবেন না। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং শেখার পরে অনেকগুলো প্ল্যাটফর্ম এবং মাধ্যম রয়েছে যেগুলো থেকে আপনি টাকা ইনকাম করতে পারবেন। যেহেতু বর্তমান সময়ে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ব্যবসা ক্ষেত্রে একটি অন্যতম ভূমিকা হিসেবে কাজ করছে তাই এই বিষয়টি শেখা যেতে পারে।
পাশাপাশি এর ভবিষ্যৎ সুদৃঢ় হবে বলে আমরা মনে করি। এ ধরনের মার্কেটিং স্টার্টেজি ফলো করার মাধ্যমে ব্যান্ড প্রোমোশন থেকে শুরু করে প্রোডাক্ট এবং সার্ভিস বিক্রয় সকল কিছুই পরিচালনা করা হয়। বর্তমান সময়ে ফেসবুকে প্রায় তিন বিলিয়নেরও বেশি অডিয়েন্স রয়েছে। এত বড় একটি অডিয়েন্সকে অবশ্যই আপনি আপনার পণ্যের গ্রাহক খুঁজতে ব্যবহার করতে পারেন। তবে সেক্ষেত্রে আপনাকে সর্ব প্রথমে স্কিল ডেভলপমেন্ট এর দিকে নজরদারি করতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বিষয়টি শুনতে সহজ মনে হলেও এর অভ্যন্তরী রয়েছে অনেক জটিল কিছু বিষয়।
আর সেগুলোই যদি আপনি ক্যাপচার করতে পারেন তাহলে আপনি হয়ে উঠতে পারেন একজন প্রফেশনাল মানের সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটার। নিচে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে আয় করার বিষয়গুলো স্পষ্ট ভাবে তুলে ধরা হলো।
ফ্রিল্যান্সিং এবং সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে ডিজিটাল মার্কেটিং একটি অন্যতম অংশ হিসেবে বিচরণ করছে। ঠিক তেমনি আপনি যদি একজন ডিজিটাল মার্কেটার হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করেই বেশিরভাগ পণ্য সেল করার চেষ্টা করবেন। সুতরাং আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স করে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বিষয়ে এ টু জেড ধারণা দেওয়া হবে। আর সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আপনি ফ্রিল্যান্সিং করার মাধ্যমে টাকা আয় করতে পারবেন। আসুন বিষয়গুলোকে একটু পয়েন্ট আকারে জেনে নেওয়া যাক।
- সর্বপ্রথমে আপনাকে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি এবং এর আদ্যপ্রান্ত সম্পর্কে বেসিক ধারণা নিতে হবে। পরবর্তীতে অ্যাডভান্স লেভেল এ যাওয়ার জন্য বেসিক ধারণা নেয়া খুবই জরুরী।
- আপনি যদি বুঝতে পারেন যে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার উপায় গুলো কি তাহলে পরবর্তী ধাপে গিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপটি গ্রহণ করতে সুবিধা হবে।
- বেশি ধারণা নেওয়ার পর আপনার উচিত হবে একটি ভালো আইটি সেন্টারের আওতায় সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কোর্স করে ফেলা। যদিও ইউটিউবের টিউটোরিয়াল ভিডিও দেখে আপনি অনেক কিছু শিখতে পারবেন কিন্তু প্রফেশনাল মানের হতে হলে অবশ্যই একটি কোর্স করা উচিত।
- কোর্স শেষে আপনার আসতে হবে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের মার্কেটপ্লেসগুলোতে। যেমন ফাইবার এবং আপ ওয়ার্কের মতো স্বনামধন্য মার্কেটপ্লেসগুলোতে প্রফেশনাল মানের একাউন্ট ক্রিয়েট করতে হবে।
- একাউন্ট ক্রিয়েট করার সময় অবশ্যই আপনার কাজের অভিজ্ঞতা এবং পোর্টফোলিও যুক্ত করতে হবে। যেগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে আপনি সেখান থেকে বায়ার নিশ্চিত করতে পারবেন এবং টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
কনটেন্ট প্রমোশন
কন্টেন্ট প্রমোশন মূলত স্পন্সরড বা চুক্তি গতভাবে অন্য অথবা সেবা প্রমোট করার প্রক্রিয়া। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে আয় করার জন্য স্পন্সরড কনটেন্ট এ বিষয়টি জানার খুব জরুরী। স্পন্সরড কন্টেন্ট সাধারণত আপনি কোন প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তিবদ্ধ ভাবে তাদের পণ্য অথবা সেবার প্রমোশন করে থাকবেন যার বিনিময়ে তারা আপনাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করবে। তবে এ ধরনের ইনকাম করার জন্য আপনার একটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভালো পরিমাণ অডিয়েন্স বা ফলোয়ার থাকতে হবে। যদি আপনার পেজে ব্যাপক পরিমাণ ফলোয়ার থাকে সেক্ষেত্রে এ ধরনের কনটেন্ট প্রমোশন করেও আপনি লক্ষ টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কিভাবে করবেন তার অন্যতম একটি উদাহরণ হল অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। আপনি কোন একটি কোম্পানির অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম গ্রহণ করবেন এবং সে অনুযায়ী যদি পণ্য অথবা সার্ভিসের বিক্রি নিশ্চিত করতে পারেন তাহলে সে ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পরিমাণ একটি কমিশনপ্রাপ্ত হবেন। উদাহরণস্বরূপ আপনি যদি এমাজন এফিলিয়েট প্রোগ্রাম গ্রহণ করেন সেক্ষেত্রে তারা আপনাকে একটি এফিলিয়েট লিংক প্রোভাইড করবে। আপনি সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই লিংকটি যুক্ত করে যদি বিভিন্ন রকম পোস্ট করেন এবং সেই লিংকে ক্লিক করে যারা প্রোডাক্টগুলো পারচেজ করবে সেখান থেকে আপনাকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশন প্রদান করা হবে।
ই-বুক এবং কোর্স বিক্রি
আপনি ফেসবুকে লক্ষ্য করলে দেখবেন ইদানীং প্রচুর পরিমাণে কোর্স বিক্রি করার বিজ্ঞাপন গুলো চলে আসে। আপনি যদি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি এ বিষয়টি সম্পর্কে অভিজ্ঞ হতে পারেন তাহলে শুধুমাত্র ফ্রিল্যান্সিং নয় নিজেও এ ধরনের কোর্স তৈরি করে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে সেল করতে পারেন। তবে সেক্ষেত্রে আপনাকে সর্ব প্রথমে স্কিল ডেভেলপমেন্ট করতে হবে এবং তারপরে কেবলমাত্র ই-বুক এবং কোর্স বিক্রি করার মতো কাজগুলো করতে পারবেন। যদিও সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে আয় করার বিষয়টি অনেকে কঠিন হিসেবে দেখে। কিন্তু আপনি যদি এই সেক্টরে ধৈর্য সহকারে লেগে থাকেন তাহলে সফলতা একদিন আসবেই।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার উপায়
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার উপায় হিসেবে সর্বপ্রথমে আপনাকে মার্কেটিং স্ট্রাটেজি এবং তাদের অ্যালগরিদম সম্পর্কে জানতে হবে। যেহেতু সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং দুই ধরনের হয়ে থাকে। প্রথমটি হল অর্গানিক উপায়ে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এবং দ্বিতীয়টি হল পেইড বিজ্ঞাপন এর মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং। তাহলে আপনি দুইটি পদ্ধতি অবলম্বন করে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করতে পারবেন। তবে পূর্বের তুলনায় বর্তমান সময়ে অর্গানিক উপায়ে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার বিষয়টি অনেক কঠিন এবং সময় সাপেক্ষ হয়ে উঠেছে।
আরোও পড়ুনঃ মোবাইল দিয়ে ডিজিটাল মার্কেটিং-ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার উপায় গুলো জানুন
আপনার পেজে যদি অধিক ফলোয়ার না থাকে সেক্ষেত্রে এ ধরনের অর্গানিক মেথড ফলো করে খুব একটা কাজ হবে না। আবার অনেক গ্রুপ রয়েছে যেখানে পোস্ট করেও সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করা যায় কিন্তু সেখানে গ্রুপের এডমিনের অ্যাপ্রভালের প্রয়োজন হয়। বেশিরভাগ গ্রুপেই আপনি পোস্ট করার পরে পোস্টটি ডিলিট করে দেওয়া হয়। আবার অনেক এডমিন রয়েছে যারা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দাবি করে যার পরিপেক্ষিতে আপনার পণ্যের বিজ্ঞাপন তারা গ্রুপে প্রচার করবে।
সুতরাং এ ধরনের ঝামেলা এড়াতে আপনাকে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার উপায় হিসেবে আমরা সাজেস্ট করব পেইড বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে সকল কিছু পরিচালনা করা। চলুন তাহলে এবার জেনে নেব সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে আয় করতে হলে কোন কোন উপায় বা স্ট্রাটেজি ফলো করা উচিত।
সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মঃ সোশ্যাল মিডিয়ার মার্কেটিং করার জন্য সর্বপ্রথমে আপনাকে সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম গুলো সম্পর্কে জানতে হবে। আপনি আর্টিকেলের একদম উপরের অংশে লক্ষ্য করলে দেখবেন সেখানে আমরা সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম গুলো তুলে ধরেছি। উপরে বর্ণনাকৃত সকল ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম গুলো ব্যবহার করে মার্কেটিং কার্যক্রমটি পরিচালনা করা যাবে। সুতরাং আপনি যদি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি এ বিষয়টি ভালোভাবে বুঝতে পারেন তাহলে মার্কেটিং কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য আপনার উচিত হবে যে কোন একটি প্লাটফর্ম নির্বাচন করা।
প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন করার বিষয়ে আপনাকে সেই প্ল্যাটফর্মটি নিতে হবে যেখানে অধিক পরিমাণে অডিয়েন্স রয়েছে। বর্তমান সময়ে একজন ডিজিটাল মার্কেটের প্রথম পছন্দ ফেসবুকে বিজ্ঞাপন পরিচালনা করা। সুতরাং আপনি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার জন্য ফেসবুক প্ল্যাটফর্ম কে বেছে নিতে পারেন।
কোয়ালিটি ফুল কন্টেন্টঃ যারা ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম করার বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়ে থাকেন এবং এ বিষয়ে হালকা নলেজ রয়েছে। তারা জেনে থাকবেন অনলাইন প্লাটফর্মের সকল বিষয়ের মূলমন্ত্র হলো কনটেন্ট। কনটেন্ট ব্যতীত কোন সেক্টরেই এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। আপনি যদি ফ্রিল্যান্সার হিসেবেও সামনে এগোতে চান সেক্ষেত্রে আপনার মার্কেটপ্লেসে ভালো মানের কনটেন্ট থাকতে হবে বা পোর্টফোলিও থাকতে হবে যার মাধ্যমে ক্লায়েন্ট আপনাকে খুঁজবে।
সুতরাং সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার ক্ষেত্রেও আপনাকে কোয়ালিটি ফুল কনটেন্ট তৈরি করার দক্ষতা গড়ে তুলতে হবে। যদি আপনার কনটেন্টে আকর্ষণ থাকে তবেই কেবলমাত্র অডিয়েন্স আপনাকে নক করবে এবং আপনার পণ্য বিক্রি বৃদ্ধি পাবে।
সঠিক এবং টার্গেটেড অডিয়েন্সঃ আপনি যদি অর্গানিক পদ্ধতিতে ও সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে আয় করতে চান সেক্ষেত্রেও অডিয়েন্স টার্গেট করতে হবে। ধরুন আপনি একটি পণ্যের বিজ্ঞাপন পোস্ট আকারে আপনার পেজে আপলোড করলেন। সেখানে অবশ্যই কাঙ্খিত অডিয়েন্স বা কাস্টমারগুলো লাইক এবং কমেন্ট করবে। সেখান থেকে তাদের ইনফরমেশন এবং তাদের চাহিদাগুলো বোঝার চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন এগুলোই আপনার টার্গেটকৃত কাস্টমার। আবার আপনি যদি পেইড বিজ্ঞাপন পরিচালনা করেন সেক্ষেত্রে অটোমেটিক ভাবে টার্গেটেড অডিয়েন্স বা কাস্টমার পেয়ে যাবেন। যাদেরকে পুনরায় আপনি রিটার্গেট করতে পারবেন।
এনগেজমেন্ট বৃদ্ধিঃ সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি এবং সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যালগরিদম কিভাবে কাজ করে এ বিষয়টি যদি আপনি বুঝতে পারেন তাহলে এনগেজমেন্ট বৃদ্ধি করা আপনার কাছে অনেকটাই সহজ হবে। আপনি যদি অর্গানিক উপায়ে সেল নিয়ে আসতে চান তাহলে এনগেজমেন্ট এর বিকল্প অন্য কিছু আর নেই। এনগেজমেন্ট হলো আপনি যে পণ্যের বিজ্ঞাপন বা পণ্যের পোস্ট পাবলিশ করলেন সেটি কত মাত্রায় অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছালো বা রিচ করলো।
যদি ভিডিও আকারে পণ্যের বিজ্ঞাপন গুলো প্রচার করেন সেক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া কর্তৃপক্ষ পোষ্টের ওয়াচ ডিউরেশন ট্র্যাক করে সেখানে রিচ, এনগেজমেন্ট এবং ইম্প্রেশন বৃদ্ধি করবে। যার ফলে আপনার পাবলিশ কৃত পোস্ট আরো অধিক লোকের কাছে পৌঁছাবে।
নিয়মিত কনটেন্ট পাবলিশঃ সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার উপায় গুলোতে আমরা কোয়ালিটি ফুল কন্টেন্ট তৈরি করার পরামর্শ দিয়েছি। কোয়ালিটি ফুল কন্টেন্ট তৈরি করার পাশাপাশি আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল নিয়মিত কন্টেন্ট পাবলিশ করা। প্রথম অবস্থায় হয়তো বা আপনার পেইজে খুব একটা অডিয়েন্স পরিলক্ষিত হবে না। কিন্তু আপনি যদি নিয়মিত কন্টেন্ট পাবলিশ করে যান তাহলে একটি সময় পর আপনার পেইজে ফলোয়ার এবং অডিয়েন্স সবগুলোই বৃদ্ধি পাবে।
অনেকেই আছেন যারা ভালো মানের কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন কিন্তু সেটি নিয়মিত পাবলিশ করেন না। এতে করে কোয়ালিটি ফুল কন্টেন্ট হলেও সেটি আর মানুষের কাছে পৌঁছায় না এবং আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেন না।
পেইড বিজ্ঞাপন পরিচালনাঃ বর্তমান সময়ে অর্গানিক উপায়ের চাইতে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে আয় করতে হলে অবশ্যই পেইড বিজ্ঞাপন পরিচালনা বিষয়টি সম্পর্কে জানতে হবে। উদাহরণস্বরূপ আপনি যদি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার জন্য ফেসবুক প্ল্যাটফর্মটি বেছে নেন তাহলে সেখানে পেইড বিজ্ঞাপন পরিচালনা করার জন্য অ্যাড ক্যাম্পেইন সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। একটি ফেসবুক এড ক্যাম্পেইন রান করার জন্য ফেসবুক অ্যাড ম্যানেজার থেকে শুরু করে পিক্সেল সেট আপ, লোকেশন, সঠিক ট্যাগ, অডিয়েন্স এজ সকল কিছু আপনাকে জানতে হবে।
মূলত এগুলো নির্ধারণ করে এড ক্যাম্পেইন পরিচালনা করলে সেখান থেকে ভালো ফলাফল আশা করা যায়। পরবর্তীতে এখান থেকে যে লিড গুলো কালেক্ট হবে, সেই অনুযায়ী আপনি আপনার কাস্টমারদের রিটার্গেট করতে পারবেন।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর কাজ কি
অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি এ বিষয়টি জানার পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর কাজ কি এই সম্বন্ধে জানার আগ্রহ প্রকাশ করে থাকেন। আপনি যদি আর্টিকেলের উপরের অংশে লক্ষ্য করেন সেখানে আমরা উল্লেখ করেছি যে, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার উপায় হল ভালো মানের কোয়ালিটি ফুল কনটেন্ট ক্রিয়েট করা। কনটেন্ট তৈরি করার পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে নিয়মিত পাবলিশ করার বিষয়টিও সামনে এসেছে। যেহেতু সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রচুর পরিমাণে অডিয়েন্স পরিলক্ষিত হয় এবং সে বিষয়টিকে কাজে লাগিয়ে আপনি আপনার ব্র্যান্ডের পরিচিতি বৃদ্ধি করতে পারবেন।
আরোও পড়ুনঃ এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো-মোবাইল দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
ব্র্যান্ড প্রমোশনের পাশাপাশি প্রোডাক্ট সেল করার জন্য অন্যতম একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম গুলো। পূর্বে শুধুমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার হয়ে থাকলেও আপনি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে আয় করতে পারবেন এবং সেখান থেকে আপনার নির্দিষ্ট পণ্যের অডিয়েন্স ও খুঁজে পাবেন। নিচে সোশ্যাল মিডিয়ার কাজগুলো পুনরায় আপনাদের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করা হলো।
- সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার ক্ষেত্রে প্রথম যে বিষয়টি সামনে আসবে সেটি হল কন্টেন্ট ক্রিয়েশন। ভালো মানের কনটেন্ট তৈরি করে সেটি সোশ্যাল মিডিয়ায় নিয়মিত পোস্ট করতে পারলে অবশ্যই একটি সময় এংগেজমেন্ট বৃদ্ধি পাবে।
- মার্কেটিং স্টার্টেজি ফলো করতে হলে অবশ্যই আপনাকে পোস্ট এর পরিকল্পনা করতে হবে। আপনি যে পণ্য অথবা সার্ভিসের পোস্ট তৈরি করছেন, সেখানে কি ধরনের তথ্য তুলে ধরলে অডিয়েন্স খুব সহজেই বুঝতে পারবে সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
- কনটেন্ট মেকিং এবং পাবলিশ করার পরের ধাপ হলো এনগেজমেন্ট মনিটরিং ও রেসপন্স। পণ্যের বিজ্ঞাপন গুলো পাবলিশ করার পরে আপনাকে সেই পোস্টের এংগেজমেন্ট মনিটরিং অর্থাৎ মেসেজের রিপ্লাই, অডিয়েন্সরা কেমন ধরনের রেসপন্স করছে সেগুলো মনিটর করতে হবে।
- পরিশেষে সোশ্যাল মিডিয়ার ফলাফল পর্যালোচনা করে একটি রিপোর্ট তৈরি করে ফেলুন। রিপোর্টে উল্লেখ করার চেষ্টা করুন যে আপনার পোস্টে কারা কারা এনগেজ হয়েছে। সেগুলোই মূলত আপনার টার্গেটকৃত কাস্টমার এবং পরবর্তীতে তাদেরকে রি টার্গেট করে পুনরায় বিজ্ঞাপন পরিচালনা করতে পারবেন।
শেষের কথা
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে আয় এ বিষয়টি শুনতে সহজ মনে হলেও এ থেকে ইনকাম করতে হলে আপনাকে অবশ্যই ধৈর্য এবং পরিশ্রমের সাথে কাজ করে যেতে হবে। মনে রাখবেন কেউ কখনো আপনাকে শুধু শুধু অর্থ প্রদান করবে না। আপনি যদি আপনার স্কিল ডেভেলপমেন্ট এবং কাজে পরিচয় দিতে পারেন তবে কেবলমাত্র অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করা সম্ভব। আপনাদের সোশ্যাল মিডিয়া জার্নিকে আরো একটু স্কিলফুল করতেই আজকে আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি এবং সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার উপায় সম্পর্কে সকল ধরনের ট্রিক্স গুলো আলোচনা করার চেষ্টা করেছি।
আশা করি এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো আপনার ফ্রিল্যান্সিং এবং সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ক্যারিয়ারকে আরো উন্নীত করতে সাহায্য করবে। আমরা সবসময় আমাদের পূর্বের অভিজ্ঞতা এবং বর্তমান সময়ের আপডেটের বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে তথ্যগুলো ইনক্লুড করার চেষ্টা করি। সুতরাং আজকের এই আর্টিকেলের বিষয়বস্তু সম্পর্কে আমাদের পোষ্টের নিচে একটি কমেন্ট করতে পারেন এবং ফ্রিল্যান্সিং টিপস, অনলাইন ইনকাম রিলেটেড সকল প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url