ব্লগ থেকে আয় করার জন্য কিসের এপ্রুভাল প্রয়োজন হয় জানুন

ব্লগ থেকে আয় করার জন্য কিসের এপ্রুভাল প্রয়োজন হয় সে সম্পর্কে আমাদের অবশ্যই জানতে হবে। এর কারণ হলো আপনি যদি একজন ফুল টাইম ব্লগার অথবা ব্লগার হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করছেন এর পরিপ্রেক্ষিতেই কিন্তু এই আর্টিকেলটি আপনি পড়তে এসেছেন। যদি নিজেকে একজন ব্লগার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চান সে ক্ষেত্রে অবশ্যই ব্লগিং কি এবং এর আদ্যপ্রান্ত সকল বিষয়ের জানতে হবে। একজন ব্লগারের সর্ব প্রথমে যে জিনিস জানতে হয় সেটি হল একটি ব্লগিং ওয়েবসাইট। কিন্তু সেই ব্লগিং ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি প্রাথমিক অবস্থায় ইনকাম আসে না। 
ব্লগ-থেকে-আয়-করার-জন্য-কিসের-এপ্রুভাল-প্রয়োজন-হয়
ইনকাম জেনারেট করার জন্য অবশ্যই এপ্রুভাল এর প্রয়োজন হয়। তাই আজকে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা ব্লগ থেকে আয় করার জন্য কিসের এপ্রুভাল প্রয়োজন হয় সে সম্পর্কে জানার চেষ্টা করব। পাশাপাশি আর্টিকেলের অভ্যন্তরে আমরা ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায় এবং কোন প্লাটফর্ম থেকে ব্লগ তৈরি করা যায় সে বিষয়েও জানতে পারবো। সুতরাং ব্লগ থেকে আয় করার জন্য কিসের এপ্রুভাল প্রয়োজন হয় এবং ব্লগিং ওয়েবসাইট এর সকল বিষয়গুলো জানার জন্য আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
পোস্ট সূচিপত্র

ব্লগিং কি?

“ব্লগিং” হলো মূলত লেখালেখি করার একটি মাধ্যম হিসেবে উল্লেখিত। আপনি যদি কোন একটি বিষয়ে দক্ষ হয়ে থাকেন এবং সে বিষয়ে লেখালেখি করতে পারেন তাহলে সেটি ব্লগ আকারে অথবা আর্টিকেল এর মাধ্যমে সকলের কাছে পৌঁছে দিতে পারবেন। সোজা কথায় বললে কোন একটি বিষয়ে যদি আপনি দক্ষ হয়ে থাকেন সেই বিষয়ে উপর ভিত্তি করে যদি লেখালেখি করে থাকেন সেটি হবে ব্লগিং। আর এ ব্লগ বা আর্টিকেলগুলো যে জায়গায় পাবলিশ করা হয় সেটি সাধারণত ব্লগিং ওয়েবসাইট নামে পরিচিত। 
একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর নিয়মিত লেখালেখি হল ব্লগিং এর মূল সংজ্ঞা। উদাহরণস্বরূপ আমরা যেমন ফেসবুকে বিভিন্ন স্ট্যাটাস দিয়ে থাকি। ঠিক তেমনি ওয়েবসাইট হলো একটি ফেসবুকের মতো জায়গা যেখানে আপনি আপনার পছন্দ মত লেখালেখি করে সেটি ব্লগ আকারে পাবলিশ করতে পারেন। বর্তমান সময়ে অনলাইন ইনকাম এর বিষয়টি সামনে আসলে অনেকেই ব্লগিং করে ইনকাম করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে আপনি যদি ব্লগিং এর মাধ্যমে ইনকাম করতে চান তাহলে অবশ্যই দীর্ঘ সময় ধরে লেখালেখি করতে পারবেন এরকম মন মানসিকতা নিয়ে মাঠে নামবেন। 

কারণ ব্লগ ওয়েবসাইট গুলো থেকে প্রথম অবস্থায় কোন ইনকাম আসে না। নির্দিষ্ট একটি সময় পড়ে আপনার পোস্ট বা আর্টিকেলগুলো যখন গুগলে র‍্যাঙ্ক করে তখনই কিন্তু ইনকাম শুরু হয়। এছাড়া ব্লগ থেকে আয় করার জন্য কিসের এপ্রুভাল প্রয়োজন হয় সেটিও একজন নতুন ব্লগারের জানতে হবে। একজন নতুন ব্লগার আরো একটি প্রশ্ন করে থাকেন সেটি হল ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায়। এই বিষয়টিও আমরা আর্টিকেলের একটি অংশে জানার চেষ্টা করব।

ব্লগিং ওয়েবসাইট

আমরা ইতিমধ্যে ব্লগিং কি এ বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হতে পেরেছি। সেখানে আমরা উল্লেখ করেছিলাম যে ব্লগ অথবা আর্টিকেলগুলো পাবলিশ করার জন্য একটি জায়গার প্রয়োজন হবে। অর্থাৎ আপনি যে প্লাটফর্মটিতে আপনার লেখালেখি বা ব্লগ পোস্ট পাবলিস্ট করবেন সেটি মূলত ব্লগিং ওয়েবসাইট। একজন ব্লগারের অবশ্যই একটি ব্লগিং ওয়েবসাইট থাকতে হবে। সাধারণত দুই ভাবে একজন ব্লগার আর্টিকেল পাবলিশ করে থাকে। প্রথমটি হল ফ্রিতে ব্লগিং ওয়েবসাইট ক্রিয়েট করে শুধু লেখালেখি গুলো মানুষকে দেখানোর জন্য করতে পারে। 

দ্বিতীয়টি হল টাকা ইনভেস্ট করে ডোমেন এবং হোস্টিং পারচেজ করে প্রফেশনাল মানের একটি ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে আর্টিকেল পাবলিশ করে। আমরা আপনাদেরকে অবশ্যই সাজেস্ট করব যে আপনি যদি ব্লগিং করে ইনকাম করতে চান তাহলে অবশ্যই প্রফেশনাল মানের ব্লগিং ওয়েবসাইট ক্রিয়েট করে তবেই লেখালেখি আরম্ভ করবেন। এতে করে আপনার ইনকামের বিষয়টি নিশ্চিত হবে এবং আপনার আর্টিকেলগুলো খুব ভালোভাবে google এর রেঙ্কে চলে যাবে। আর এই ব্লগিং ওয়েবসাইট গুলোতে যারা ব্লগ পোস্ট করে থাকে তাদেরকে আমরা বলে থাকি ব্লগার। 

সুতরাং যে ব্লগ রাইটিং করে তাকে বলা হচ্ছে ব্লগার এবং সে ব্লগ পোস্ট করার জন্য যে প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করা হচ্ছে সেটি মূলত ব্লগিং ওয়েবসাইট। ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায় এ বিষয়টি অনেকটা ফ্রিল্যান্সিং এর সঙ্গে যুক্ত করা যাবে। ফ্রিল্যান্সিংয়ের যদি আপনি ভাল মানের অর্ডার পেয়ে যান তাহলে যেমন ইনকাম বেশি হয়। ঠিক তেমনি আপনার লেখা ব্লগ যদি গুগলে র‍্যাঙ্ক করে এবং সেখানে ভিজিটর বা ট্রাফিক বেশি আসে তাহলে সেখানে ইনকাম বেশি আসবে। ব্লগিং করে ইনকাম এর বিষয়টি প্যাসিভ ইনকাম এর মধ্যে পড়ে। 

ব্লগিংয়ের মূল চালিকা শক্তি হলো ভালো মানের লেখালেখি দর্শকদের উপহার দেওয়া। আর একটি ব্লক ওয়েবসাইটের মূল প্রাণ হলো সেখানে থাকা ছবি, ব্লগের লিংক, ওয়েব পেজ, ক্যাটাগরি ইত্যাদি।

ব্লগ থেকে আয় করার জন্য কিসের এপ্রুভাল প্রয়োজন হয়

আমাদের আজকের আর্টিকেলের মূল বিষয়বস্তু হলো ব্লগ থেকে আয় করার জন্য কিসের এপ্রুভাল প্রয়োজন হয়। আপনি যদি এই মুহূর্তে আমাদের এই আর্টিকেল পড়ে থাকেন এটিও কিন্তু একটি ব্লগ পোস্টের অন্তর্গত। সুতরাং আমরা ব্লগ রাইটিং এবং এর সকল বিষয়গুলো নিয়ে লেখালেখির মাধ্যমে আপনাদেরকে ব্লক পোস্ট এর মাধ্যমে বিষয়টিকে জানানোর চেষ্টা করছি। আর আমাদের লেখালেখির মানের উপর ভিত্তি করেই কিন্তু google এ এই পোস্টটি স্থান পেয়েছে। পাশাপাশি আমাদের লেখার অভ্যন্তরে যদি আপনি গুরুত্বপূর্ণ সকল তথ্যগুলো পেয়ে থাকেন। 

তবে কিন্তু আর্টিকেলটি পড়ার ইচ্ছা পোষণ করেছেন। একজন নতুন ব্লগার যে কিনা ব্লগিং মাত্র শুরু করেছে তার ক্ষেত্রে কিন্তু এই বিষয়গুলো অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ। যেমন কারো যদি ইউটিউব চ্যানেল থাকে তাহলে সরাসরি চ্যানেল থেকে ইনকাম হয় না। প্রথমে চ্যানেলটি মনিটাইজড করে নিতে হয়। পরবর্তীতে গুগল এডসেন্স এর মাধ্যমে কিন্তু টাকা ইনকাম করা যায়। ব্লগিং ওয়েবসাইট এর ক্ষেত্রেও বিষয়টি একই হয়ে থাকে। সর্বপ্রথমে আপনাকে আপনার ওয়েবসাইটটি মনিটাইজ করে নিতে হবে। মনিটাইজেশন অন হয়ে গেলেই আপনি গুগল এডসেন্স অ্যাপ্রুভাল পেয়ে গেলে। 

সেখান থেকে ট্রাফিকের অ্যাড ক্লিক এর ভিত্তিতে পেমেন্ট পেয়ে যাবেন। এখন প্রশ্ন আসতে পারে যে ব্লক থেকে আয় করতে হলে শুধু গুগল অ্যাডসেন্স এর অ্যাপ্রুভাল পাওয়া যায় কিনা। পাঠক বিষয়টি তেমন না, আপনি চাইলে গুগল এডসেন্স ব্যতীত আরো কিছু এড কোম্পানি রয়েছে যারা আপনার ব্লক পোস্টে অ্যাড শো করানোর পরিপ্রেক্ষিতে আপনাকে পেমেন্ট প্রদান করবে। আমরা আজকে গুগল এডসেন্স সহ আরো যে অ্যাড কোম্পানিগুলো রয়েছে অর্থাৎ ব্লগ থেকে আয় করার জন্য কিসের এপ্রুভাল প্রয়োজন হয় এই বিষয়টিতে আমরা আরও অন্যান্য সকল কোম্পানি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানার চেষ্টা করব।

গুগল এডসেন্স (Google AdSense)

ব্লগিং থেকে ইনকাম করার ক্ষেত্রে সর্ব প্রথমে আপনাকে গুগল এডসেন্সের অ্যাপ্রভাল দেওয়ার ট্রাই করতে হবে। এর কারণ হলো এখান থেকে ইনকাম এর পরিমাণ বেশি আসার পাশাপাশি এখানে লাইফ গ্যারান্টি ইনকামের সুযোগ পাচ্ছেন। বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে অ্যাড কোম্পানির গুলোর মধ্যে এগিয়ে রয়েছে গুগল এডসেন্স। গুগল এডসেন্স এর মাধ্যমে শুধুমাত্র ব্লগ ওয়েবসাইট নয় ইউটিউব চ্যানেল থেকেও ইনকাম করা সম্ভব হয়। সবচাইতে সেরা কোম্পানিগুলো এবং বিশ্বস্ততার দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে গুগল এডসেন্স। 

তবে এটির অ্যাপ্রভাল পাওয়ার জন্য আপনাকে কিছু ক্রাইটেরিয়া মেন্টেন করতে হবে। প্রথমত আপনার একটি ব্লগিং ওয়েবসাইট ক্রিয়েট করতে হবে। এরপর সেখানে নিয়মিত আর্টিকেল বা ব্লগ পোষ্ট করে যেতে হবে। একটি নির্দিষ্ট সময় পর সেই পোস্টগুলো রেংক করা শুরু করবে। যখন আপনি বুঝতে পারবেন প্রতিদিন প্রায় ১০০ জনের মত ট্রাফিক আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিট করছে। তখন আপনি গুগল এডসেন্সের জন্য এপ্লাই করতে পারবেন। গুগল এডসেন্স এপ্রুভাল পেয়ে গেলে আপনি সেটি আপনার ওয়েবসাইটের সাথে যুক্ত করে দিতে পারবেন। 

যুক্ত হয়ে গেলে সেখানে পরবর্তীতে অ্যাড ক্লিক এর উপর নির্ভর করে RPM (আরপিএম), CPC (সিপিসি) এর হিসেব অনুযায়ী অ্যাকাউন্টে ডলার জমতে শুরু করবে।

Propeller Ads (প্রোপিলার অ্যাডস)

গুগল এডসেন্স এরপরে সবচেয়ে ভালো মানের একটি অ্যাড কোম্পানি হল প্রপিলার অ্যাডস কোম্পানি।ব্লগ থেকে আয় করার জন্য কিসের এপ্রুভাল প্রয়োজন হয় এই প্রশ্নটিতে আমরা প্রোপিলার এডসকে দ্বিতীয় নাম্বারে রেখেছি। আপনি যদি কোন ভাবে গুগল এডসেন্স এর এপ্রুভাল না পেয়ে থাকেন তাহলে এই অ্যাড কোম্পানির আওতায় আবেদন করতে পারেন। তবে ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায় এ বিষয়টিতে এখানে একটু ইনকাম কম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কেননা google এডসেন্স যে পরিমাণ টাকা তার ক্রিয়েটর কে দিয়ে থাকে। 
সেই পরিমাণ অর্থ অন্য কোম্পানি দিতে পারবে না। তবে আপনি যদি গুগল এডসেন্স এর এপ্রুভাল না পান সে ক্ষেত্রে আমরা Propeller Ads (প্রোপিলার অ্যাডস) আপনাদেরকে সাজেস্ট করছি।

Adsterra (এ্যাড স্ট্রা)

বর্তমান সময়ে Adsterra (এ্যাড স্ট্রা) এর নাম ডাক ভালোই শোনা যাচ্ছে। বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক বিজ্ঞাপন দেখা যায় যেখানে বলা হচ্ছে যে এই এক কোম্পানি ভালো মানের অ্যামাউন্ট তার ব্যবহারকারীদের প্রদান করছে। সুতরাং আপনি উপরে ওই দুটো এড কোম্পানির সাথে এটিকেও যুক্ত করতে পারেন। Adsterra (এ্যাড স্ট্রা) অ্যাড কোম্পানি গুলোতে আপনি খুব সহজেই এপ্লাই করতে পারেন এবং এপ্রুভাল ও পেয়ে যাবেন। গুগল এডসেন্স যেমন অনেক কিছু টার্মস এন্ড কন্ডিশন ফলো করে আপনাকে এপ্রুভাল দিবে। কিন্তু এ ধরনের কোম্পানি থেকে আপনি খুব সহজেই এপ্রুভাল নিয়ে ব্লগ থেকে ইনকাম করার সুযোগ পাবেন।

EZoic (ইজয়িক)

ব্লগ থেকে আয় করার জন্য আপনি EZoic (ইজয়িক) এই প্ল্যাটফর্মটিকে এজন্যই বেছে নিবেন কারণ এটি একটি ভালো মানের অ্যাডভারটাইজিং কোম্পানি। আপনি যদি সর্বোচ্চ অ্যাডভার্টাইজিং কোম্পানিগুলোতে এপ্রুভাল না পেয়ে থাকেন তাহলে EZoic অ্যাড কোম্পানিতে এপ্লাই করতে পারেন। এই এক কোম্পানিটি আপনাকে খুব সহজেই তাদের এপ্রুভালটি প্রদান করে দেবে। আর যদি আপনি এপ্রুভাল নিতে পারেন তাহলে প্রতিনিয়ত সেখান থেকে ইনকাম করতে পারবেন। যেহেতু এ সকল এড কোম্পানি খুব কম টাকা প্রদান করে থাকে সেজন্য আপনাকে আপনার ওয়েবসাইটে প্রচুর পরিমাণ ট্রাফিক জেনারেট করতে হবে।

Media Vine (মিডিয়া ভাইন)

ব্লগ থেকে আয় করার জন্য কিসের এপ্রুভাল প্রয়োজন হয় এবং ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায় এ বিষয়টিতে আমরা গুগল এডসেন্সকে সর্ব প্রথমে প্রাধান্য দিয়েছি। এর মূল কারণ হলো গুগল এডসেন্স খুব ভালো পরিমাণে টাকা তাদের ক্রিয়েটরদের প্রদান করে। কিন্তু আপনি যখন সে ধরনের এপ্রুভাল পাবেন না তখনই কিন্তু আমরা যে সকল এড কোম্পানির নামগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি এখানে এপ্লাই করবেন। তারই ধারাবাহিকতায় মিডিয়া ভাইন দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বস্ততার সাথে তাদের ক্রিয়েটরদের অর্থ প্রদান করে যাচ্ছে। আপনি চাইলে তাদের কাছ থেকে এপ্রুভাল নিয়ে আপনার ওয়েবসাইটে অ্যাড শো করিয়ে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

Ad Thrive (অ্যাড থ্রীভ)

Ad Thrive (অ্যাড থ্রীভ) হল ব্লগ থেকে ইনকাম করার আরো একটি অন্যতম উপায়। অন্যান্য কোম্পানি গুলোর মত এটিও একটি অ্যাডভার্টাইজিং কোম্পানি। এই কোম্পানিও আপনার ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম করার জন্য এপ্রুভাল প্রদান করে থাকে। অর্থাৎ তাদের কোম্পানি থেকে অ্যাড শো করানোর জন্য যখন আপনি এপ্রুভাল পেয়ে যাবেন। তখন আপনার ওয়েবসাইটে এড গুলো সুন্দরভাবে সাজিয়ে বসাবেন। পরিপ্রেক্ষিতে যখন ট্রাফিক এসে অ্যাড এ ক্লিক করবে সেই পরিপ্রেক্ষিতে আপনাকে নির্দিষ্ট একটি অ্যামাউন্ট প্রদান করা হবে।

Media.net (মিডিয়া ডট নেট)

আপনার ওয়েবসাইটে এড বসিয়ে ইনকাম করার আরো একটি উপায় হল মিডিয়া ডট নেট এই কোম্পানি থেকে এপ্রুভাল গ্রহণ করা। ব্লগিং ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম করতে হলে আপনি Media.net (মিডিয়া ডট নেট) এর এপ্রুভাল নিতে পারেন। তারা ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম করার জন্য মনিটাইজেশন এর সুযোগ দিয়ে থাকে। যদি টার্মস এন্ড কন্ডিশন গুলো ফলো করে অ্যাপ্লাই করেন তাহলে তারা খুব সহজেই আপনাকে এপ্রুভাল দিয়ে দিবে। পরবর্তীতে আপনি সেই অ্যাড কোম্পানি থেকে টাকা ইনকাম করতে পারবেন এবং সেটি ব্যাংকে ট্রান্সফার করতে পারবেন।

ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায়

আমরা ইতিমধ্যে ব্লগ থেকে আয় করার জন্য কিসের এপ্রুভাল প্রয়োজন হয় সেই বিষয়টি জানতে পেরেছি। আপনাদের নিকট আরো একটি বহুল প্রশ্ন ছিল সেটি হলো ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায় এ বিষয়টি সম্পর্কে। সাধারণত ব্লগিং করে কত টাকা ইনকাম করা যাবে এটি একুরেট ভাবে বলা সম্ভব নয়। এর কারণ হলো ব্লগিং করে ইনকাম করার বিষয়টি মূলত আসে ট্রাফিকের উপর নির্ভর করে। আপনার ওয়েবসাইটে যদি অধিক ট্রাফিক বা ভিজিটর জেনারেট হয় তাহলে আপনার ইনকাম অবশ্যই বেশি হবে। 
ব্লগ-থেকে-আয়-করার-জন্য-কিসের-এপ্রুভাল-প্রয়োজন-হয়
কিন্তু সেই পর্যন্ত যেতে আপনাকে অবশ্যই একটি নির্দিষ্ট সময় অপেক্ষা করতে হবে। প্রাথমিক অবস্থায় কারো ওয়েবসাইটেই সেরকম মানের কোন ভিজিটর পরিলক্ষিত হয় না। ধীরে ধীরে আপনি যখন ওয়েবসাইটে আর্টিকেল পাবলিশ করা শুরু করবেন তখন সেখানে ভিজিটর গেইন হওয়া শুরু হবে। এভাবে আস্তে আস্তে যখন আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিটর বৃদ্ধি পাবে তার পরিপ্রেক্ষিতেই কিন্তু আপনার ইনকামও বৃদ্ধি পেয়ে যাবে। ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের আমরা যখন একটিভ ইনকামের কথা আলোচনা করি তখন সেখানে অর্ডারের বিষয়টি চলে আসে। 

একজন ফ্রিল্যান্সার এর কাজের অর্ডারের উপর নির্ভর করে তার আয় ইনকাম। কিন্তু প্যাসিভ ইনকামের বিষয়গুলো একটু আলাদা হয়ে থাকে। এখানে কাজের বিষয়টি মূলত অ্যাক্টিভ ইনকামের কাজের বিষয়ে সাথে সম্পূর্ণ আলাদা ইনকামের বিষয়টিও আলাদা। আপনি প্যাসিভ ইনকাম করার জন্য একবার যদি কাজ করেন সেখান থেকে বারবার ইনকাম হওয়ার সুযোগ আছে। ঠিক তেমনি ব্লগ ওয়েবসাইটে যদি কাজ করেন তাহলে আর্টিকেল গুলো যখন একবার পাবলিশ হয়ে যাবে তখন বারবার ইনকাম হওয়া শুরু হবে কিন্তু সেটি সময় লাগবে। 

যখন আপনি গুগল এডসেন্স অথবা অন্যান্য কোম্পানির অ্যাডভার্টাইজিং এপ্রুভাল পেয়ে যাবেন তখন সেখানে পেজ ভিউ এর উপর নির্ভর করে আপনাকে ডলার প্রদান করা হবে। আপনার ওয়েবসাইটে যখন ট্রাফিক আসবে তখন তারা সেই সকল বিজ্ঞাপনে ক্লিক করবে তার ওপর হিসেব-নিকেশ করে অর্থ প্রদান করা হবে। CPC এরপর নির্ভর করে যে প্রতিদিন আপনার কত টাকা ব্লক ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম হবে। যদি আপনার ওয়েবসাইটে প্রতিদিন ১০০০ পেজ ভিউ হয় অর্থাৎ ১০০০ জন ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইট ভিজিট করে। সে ক্ষেত্রে ঘরে এড ক্লিক করবে ৫০ থেকে ৬০ টি। 

আর এক্ষেত্রে সিপিসি (CPC) যদি ০.০০৬ পয়সা হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে অ্যাড ক্লিক অনুযায়ী ইনকাম আসবে প্রায় ৩.৬০ ডলার এর মত। তাহলে মাসিক হিসেব করলে দাঁড়াবে প্রায় কম বেশি ১০৫ ডলার। ১০৫ ডলার বাংলা টাকায় কনভার্ট করলে সেটি আসবে ১৩ হাজার টাকার মত। আমরা এটি শুধুমাত্র প্রাথমিক অবস্থায় একজন ক্রিয়েটর ব্লগ থেকে আয় করার জন্য কিসের এপ্রুভাল প্রয়োজন হয় এ বিষয়টি জেনে বুঝে ইনকাম শুরু করতে পারবে। পরবর্তীতে ভিজিটর যত বেশি হবে ইনকাম তত বেশি হতে থাকবে। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন যে ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায়।

ব্লগিং এর মূল চালিকা শক্তি কি?

একটি ব্লগ ওয়েবসাইটে ট্রাফিক জেনারেট করার জন্য অবশ্যই একটি মূল বিষয় বা চালিকাশক্তি কাজ করে থাকে। আপনি যদি সে বিষয়গুলো আপনার ব্লগ ওয়েবসাইটে এপ্লাই করতে না পারেন সে ক্ষেত্রে আপনার ওয়েবসাইটে খুব একটা ট্রাফিক জেনারেট হবে না। এজন্য ব্লগের মূল চালিকা শক্তি কি এটি আপনার জানতে হবে। আমাদের মতে ব্লগিংয়ের মূল চালিকাশক্তি হলো অডিয়েন্স বা পাঠককে আকৃষ্ট করা। যদি আপনি আপনার পাঠকদের আপনার লেখনীর মাধ্যমে আকৃষ্ট করতে পারেন তবেই কিন্তু ব্লগিং করে ভালো কিছু করা সম্ভব। 

আরো একভাবে বলা যায় যে ব্লগিংয়ের মূল প্রাণ হল আর্টিকেল। আর্টিকেলের অভ্যন্তরে যদি আপনি গুরুত্বপূর্ণ সকল তথ্যগুলো ইনপুট করতে পারেন যা পাঠকের উপকারে আসে তাহলে কিন্তু সেই ব্লগগুলো গুগলে বেশি র‍্যাঙ্ক করে। যখন আমরা একটি আর্টিকেল লিখে সেটি ব্লগ ওয়েবসাইটে পাবলিশ করি তখন পোস্টটি ইনডেক্স করার জন্য রিকুয়েস্ট পাঠাতে হয়। পোস্ট ইনডেক্স হওয়ার পর গুগল কর্তৃপক্ষ সেটি সার্চ ইঞ্জিনের উপরের দিকে কিছুদিন পরে নিয়ে আসে। এরপরে পাঠক যখন আমাদের আর্টিকেলটি পড়ার জন্য সেখানে ক্লিক করে।
কতক্ষণ ধরে সেই আর্টিকেলটি পড়ছে সেটি গুগল রোবট হিসেব করে। যদি তারা দেখে আর্টিকেলটি বহু মানুষ অনেকক্ষণ ধরে পড়ছে। তাহলে সেই আর্টিকেল বা পোস্টে আরো ভিজিটর গেইন করার জন্য তারা ইম্প্রেশন সেট করে দেয়। আর এরকম বেশি বেশি ইম্প্রেশন পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে উক্ত আর্টিকেল বা ব্লক পোস্টে প্রচুর পরিমাণে ভিজিটর জেনারেট হয়। তাহলে ব্লগের মূল চালিকা শক্তি কি এ প্রশ্নতে আমরা বলতে পারি ভালো মানের কোয়ালিটি ফুল আর্টিকেল রচনা। কনটেন্ট যদি ভাল হয় তাহলে অবশ্যই ভালো রেজাল্ট আশা করা যায়। 

সুতরাং একজন নতুন ব্লগারের ব্লগ থেকে আয় করার জন্য কিসের এপ্রুভাল প্রয়োজন হয় এ বিষয়টি জানার পাশাপাশি ব্লগিংয়ের মূল চালিকাশক্তি কি এটিও জানতে হবে। চলুন বিষয়গুলোকে একটু পয়েন্ট আকারে জেনে নেওয়া যাক।
  • আপনি যখন কোন আর্টিকেল রচনা করবেন তখন অবশ্যই তথ্যসমৃদ্ধ বিষয়গুলো ইনক্লুড করার চেষ্টা করবেন। যেন পাঠক বিষয়গুলো পড়ে আকর্ষণ বোধ করে এবং বিস্তারিত ধারণা পায়।
  • আর্টিকেল রচনা করতে গেলে সব সময় আপনাকে আপডেট কিছু করার চিন্তা করতে হবে। কোন বিষয়গুলো কিভাবে লিখলে পাঠক খুব সহজেই বুঝতে পারবে সে সম্পর্কে প্রতিনিয়ত নিজেকে আপডেট করতে হবে।
  • আর্টিকেল রচনা করার পূর্বে অবশ্যই আপনাকে কিওয়ার্ড রিসার্চ করতে হবে। ভালো মানের কিওয়ার্ড যেগুলোতে সার্চ ভলিউম রয়েছে সেগুলো নিয়ে আর্টিকেল লেখা উচিত।
  • অনেকে আর্টিকেল লিখার সময় অন পেজ এসইও বিষয়টিকে খুব একটা গুরুত্ব দেয় না। কিন্তু একটি ব্লগ পোস্ট কে রেংক করানোর ক্ষেত্রে অন পেজ এসইওর গুরুত্ব অপরিসীম। তাই আর্টিকেল রাইটিং এর সঙ্গে সঙ্গে এসইও করতে হবে।
  • প্রত্যেকটি আর্টিকেলের টাইটেল এমন ভাবে দিতে হবে যেন পাঠক এটি দেখেই ক্লিক করতে বাধ্য হয়। আর যত বেশি ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইটে আসবে আপনার ইনকাম ততোটাই বৃদ্ধি পাবে।
  • সব সময় চেষ্টা করতে হবে সেই সকল কন্টেন্ট গুলো নিয়ে আর্টিকেল লেখার যেগুলোতে পাঠকের জানার ইচ্ছা বা চাহিদা রয়েছে। সেগুলো নিয়েই লিখতে হবে যেগুলো পড়ে পাঠক উপকৃত হবে।
  • আর্টিকেল রাইটিং এর অন্যতম আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো প্যারাগ্রাফ আকারে আর্টিকেল লেখা। প্রত্যেকটি হেডলাইন দেওয়ার পর বিষয়বস্তুগুলোকে প্যারাগ্রাফ আকারে লেখার চেষ্টা করুন।
  • অনেকে রয়েছেন যারা নিয়মিত আর্টিকেল পাবলিশ করেন না। এ বিষয়টির জন্যও কিন্তু আপনাদের ওয়েবসাইট গুলো রেংক করতে পারে না। আপনাকে নিয়ম মেনে প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে আর্টিকেল পাবলিশ করার চেষ্টা করতে হবে।
আপনি যদি উপরে বর্ণনাকৃত এ বিষয়গুলো ফলো করে কাজ করতে পারেন তাহলে একটি সময় আপনার ব্লগ ওয়েবসাইটটি ভালো একটি পর্যায়ে অবস্থান করবে বলে আমরা মনে করি। আমরা নিজেও আর্টিকেল রচনা করার ক্ষেত্রে এ বিষয়গুলো ফলোআপ করার মাধ্যমে নিয়মিত ব্লগ ওয়েবসাইটে আর্টিকেল পাবলিশ করে থাকি। আর আপনি যদি এ ধরনের মন মানসিকতা নিয়ে কাজ শুরু করতে পারেন যে আপনি নিয়মিত আর্টিকেল পাবলিশ করতে পারবেন তবে এই সেক্টরে আসা উচিত। নতুবা আপনার শুধু শুধু সময় নষ্ট হবে ব্লগিং সেক্টর থেকে আপনি কিছুই করতে পারবেন না।

লেখকের শেষকথা

একজন নতুন ব্লগারের প্রথম যে বিষয়টি জানতে হয় সেটি হল ব্লগ থেকে আয় করার জন্য কিসের এপ্রুভাল প্রয়োজন হয় এই বিষয়গুলো। সেজন্যই কিন্তু আমরা আজকে এ আর্টিকেলের অভ্যন্তরে একজন বিগিনার ব্লগারের কথা চিন্তা করে প্রত্যেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। পাশাপাশি বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায় এ বিষয়টিতে সঠিক তথ্যগুলো প্রদান করার চেষ্টা করেছি। আমরা আমাদের অভিজ্ঞতাগুলো কাজে লাগিয়ে প্রত্যেকটি বিষয়গুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছি যা আপনাদের ব্লগিং যাত্রাকে আরও একধাপ এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে। 

ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের এই প্যাসিভ ইনকামের ব্লগিং বিষয়টি নিয়ে যদি আপনি কাজ করেন তাহলে অবশ্যই একটি সময় সফলতা অর্জন করা সম্ভব। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ব্লগাররা ধৈর্য হারিয়ে ফেলে এবং সেখান থেকে ছিটকে পড়ে যায়। আপনি যদি একজন প্রফেশনাল মানের ভালো ব্লগার হতে পারেন তাহলে বাংলা ব্লগিং এবং ইংরেজি ব্লগিং দুটো নিয়েই কাজ শুরু করতে পারেন। বলে রাখা ভালো বাংলা ব্লগিং এর চাইতে ইংরেজি ব্লগিং এ ইনকাম বেশি হয়। সুতরাং আপনি এ বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করতে পারেন এবং প্যাসিভ ইনকাম করে আপনার জীবনকে সফলকামি হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url